জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকটজনক শ্রেণিতে রয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বের ১৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮তম, স্কোর ১২। গত ১০ বছরে এই স্কোর নেমেছে ৮ পয়েন্টে। দুই যুগে কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার (২১ মে ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের ‘বৈশ্বিক মতপ্রকাশ প্রতিবেদন-২০২৪’-এ উঠে এসেছে এ চিত্র।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা নিয়ে কাজ করা আর্টিকেল নাইনটিন ২০১৭ সাল থেকে ‘বৈশ্বিক মতপ্রকাশ প্রতিবেদন’ প্রকাশ করে আসছে। এবারের প্রতিবেদনটি আজ বিশ্বজুড়ে একযোগে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আর্টিকেল নাইনটিনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করেন আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম।
প্রতিবেদনে ২৫টি সূচক ব্যবহার করে ১৬১টি দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পরিমাপ করা হয়েছে। এসব সূচককে ৬টি বড় ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। সূচকগুলোর বিপরীতে ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত মতপ্রকাশ স্কোর নির্ধারণ করা হয়। স্কোরের ভিত্তিতে ‘সংকটজনক’, ‘অতি বাধাগ্রস্ত’, ‘বাধাগ্রস্ত’, ‘স্বল্প বাধাগ্রস্ত’ ও ‘মুক্ত’-এই ৫টি শ্রেণিতে দেশগুলোকে ভাগ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ‘সংকটজনক’ শ্রেণিতে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ১২। পাঁচ বছর ধরেই বাংলাদেশের স্কোর ১১ ও ১২-এর মধ্যে আটকে আছে। আর গত দুই যুগে বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
২০০০ সালে মতপ্রকাশের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ‘বাধাগ্রস্ত’ শ্রেণিতে। সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে সাংবাদিকদের হয়রানি মুক্ত পরিবেশে কাজ করার স্বাধীনতার সূচকটিতে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০৭ সালের পর থেকেই দেশে সাংবাদিকদের হয়রানি মুক্ত পরিবেশের সূচকটি ঋণাত্মক স্কোর করতে শুরু করে এবং গণমাধ্যমের সেল্ফ সেন্সরশিপের স্কোরও নেতিবাচক হয়ে পড়ে। এই প্রবণতা পরবর্তী দেড় দেশকের বেশি সময় ধরে অব্যাহত রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় মুক্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। এ অঞ্চলের ৮টি দেশের মধ্যে ৩টির অবস্থাই সংকটজনক (ভারত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান)। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে উন্নতি দেখিয়েছে শ্রীলংকা।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন,
দেশে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের জন্য ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। সমালোচনা গ্রহণ করার সংস্কৃতি দেশে গড়ে ওঠেনি। ক্ষমতার রাজনীতির হাতে মতপ্রকাশ জিম্মি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নজরদারি ও সভা-সমাবেশ করার অধিকারের দিক থেকে বাংলাদেশ পিছিয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, স্কোর থেকে ভয়াবহতা বোঝা যায় না। সরকারের মনস্তত্ত্ব হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা। সরকার সত্যিকারের গণতান্ত্রিক হলে বিরুদ্ধ মত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, সরকার জনগণকে ভয় পেলে সেটি বিপজ্জনক। সরকার জনগণকে ভয় পেলে তারা নানাভাবে আইন দিয়ে সেটা মোকাবিলা করার চেষ্টা করে। সাইবার নিরাপত্তা আইন হয়েছে। সেটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চেয়ে কিছুটা নমনীয়। কিন্তু ভয়ের সংস্কৃতি রয়েই গেছে। যত দিন এই ভয়ের সংস্কৃতি থাকবে, তত দিন মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় অবনতি ঘটতে থাকবে।
মেরামত শেষে চসিকের কাছে তিন ড্রাম্প ট্রাক হস্তান্তর করল বিআরটিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।