দেশের ফুটবলে নতুন একটা অধ্যায়ের শুরুটা যেন হলো হামজা চৌধুরীর কাছ থেকে। কেবল যে জনপ্রিয়তা বেড়েছে তাইই না, ফুটবলের ঝিমিয়ে থাকা জনপ্রিয়তা এখন অনেক বেশি প্রকাশ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যাবতীয় আলোচনার একটা বড় অংশ ব্যস্ত ফুটবলকেন্দ্রিক আলোচনার মাঝে। তাতে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরও বেশ কিছু নাম।
কানাডা থেকে আসা সামিত সোমকে নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরেই চলছে চর্চা। গতকালই হাতে পেয়েছেন জন্মনিবন্ধন সনদ। এবার পাসপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় তিনি। এরইমাঝে জানা গেল আরেকখবর। হামজা চৌধুরীর মতোই ইংল্যান্ড থেকে এসে বাংলাদেশের জার্সিটা গায়ে জড়াতে চান সান্দারল্যান্ডের তরুণ মিডফিল্ডার কিউবা মিচেল।
ইংল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব সান্ডারল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা কিউবা মিচেল। তার বাবা জ্যামাইকান হলেও মা বাংলাদেশি। সেই সূত্রে তার বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে খেলছেন প্রিমিয়ার লিগ-২ এ। এই লিগটি মূলত বয়সভিত্তিক দলগুলোর মাধ্যমে গড়া।
চলতি মৌসুমে কিউবা এখন পর্যন্ত স্কোয়াডে ছিলেন ৯ ম্যাচে। শুরুর একাদশে ছিলেন ৩ ম্যাচে আর বদলি হিসেবে নেমেছেন ৪ ম্যাচ। বেঞ্চে বসে সময় পার করেছেন ২ ম্যাচে। এবারে দেখা যাক কিউবা মিচেলের খেলোয়াড়ি ধরণের আদ্যোপান্ত
মিডফিল্ডের নতুন ভরসা
কিউবা স্বভাবজাত সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। ড্রিবলিংয়ে পটু, পাসিং বেশ ভালো। অ্যাজিলিটির দিক থেকেও উপমহাদেশীয় ঘরানার যেকোনো মিডফিল্ডারের চেয়ে বেশ ভালো বলা চলে তাকে। বলা যেতে পারে, হামজা চৌধুরী কিংবা সামিত সোমের পাশাপাশি আরও একজন মিডফিল্ডারকে উড়িয়ে আনছে বাংলাদেশ। তবে কিউবার মূল জাদু আক্রমণ তৈরিতে।
চলতি বছর প্রিমিয়ার লিগ-টু’তে যতবারই মাঠে নেমেছেন, খেলেছেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে। নরউইচের অনূর্ধ্ব-২১ দলের বিপক্ষে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে নেমেই পেয়েছেন চলতি মৌসুমের একমাত্র অ্যাসিস্ট। বদলি নামা ম্যাচগুলোতেও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবেই দেখা গেছে তাকে।
সবমিলিয়ে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, ক্যারিয়ারে ৮২ শতাংশ ম্যাচ কিউবা মিচেল খেলেছেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে। আর ১৮ শতাংশ ম্যাচ খেলেছেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে।
শক্তিমত্তা কোথায়?
অফেন্সিভ ট্রাঞ্জিশনে কিউবা মিচেলের দক্ষতা বেশ দারুণ। ড্রিবলিংয়ের সঙ্গে পাসিং সেন্স ভাল থাকার সুবাদে প্রতি আক্রমণে বেশ পটু এই তারকা। ট্যাকলিং করার ক্ষমতাটাও সহজাত। তবে শক্তির সবচেয়ে বড় জায়গা পুরো মাঠ জুড়ে খেলার সক্ষমতা। নাম্বার এইট হিসেবে মাঠের অনেকটা জায়গা নিজের দখলে রেখে খেলতে ভালোবাসেন কিউবা মিচেল।
বর্তমানে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার ডায়মন্ড ফর্মেশনের চূড়ায় খেলতে পারেন কিউবা মিচেল। যদিও সেখানে শেখ মোরসালিনের জায়গা অনেকটাই পাকা। তবে গেম বিল্ডআপে বাংলাদেশের অস্ত্র হতে পারে কিউবা এবং মোরসালিনের রসায়ন।
কিউবাকে নিয়ে কোচেদের ভাষ্য
দুবছর আগে কিউবা মিচেলকে বার্মিংহ্যাম থেকে সান্দারল্যান্ডে দলবদল সেরেছিলেন কিউবা মিচেল। আর শুরুতেই দেখিয়েছেন নিজের প্রতিভার ঝলক। সান্দারল্যান্ড অ্যাকাডেমির কোচ রবিন নিকোলস কিউবাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন শুরুতেই।
‘বার্মিংহ্যাম থেকে ১৬ বছর বয়সে ক্লাবে (সান্দারল্যান্ড) যোগ দেয় কিউবা। আর এরইমাঝে নিজের ভেতরে থাকা প্রতিভার জানান সে দিয়েছে। দেশের একটা নতুন এলাকায় এমন একজন তরুণের মানিয়ে নেয়াটা কঠিন। কিন্তু কিউবা সেই চ্যালেঞ্জ উৎরে গিয়েছে।’
নিজের প্রতিভাগুণে সান্দারল্যান্ডে এসেই পেশাদার চুক্তি সম্পন্ন করেন কিউবা। যার সুবাদে ১৮ বছর বয়সেই খেলছেন অনূর্ধ্ব-২১ দলের সঙ্গে। বাংলাদেশের ফুটবলে যে নতুন জোয়ার তৈরি হয়েছে প্রবাসী ফুটবলারদের নিয়ে, তাতে কিউবা মিচেলের সংযুক্তিটা উন্মাদনা বাড়িয়েছে আরও অনেকটা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।