আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আপনারা জানেন যে উঠ তার শরীরে জল ধরে রাখতে পারে। তবে কখনো কি শুনেছেন গাছ তার কাণ্ডে জল ধারণ করে রাখে। অবাক হচ্ছেন নিশ্চই? তবে এটা সত্য। পৃথিবীতে এমন এক ধরণের গাছ রয়েছে যেটি তার কাণ্ডের মধ্যে লক্ষ লক্ষ লিটার জল ধারণ করে রাখতে পারে। আপনাদের আজ এই গাছটি সম্পর্কে বলবো।
চলুন জেনে নিন কি সেই গাছ?
পৃথিবীতে বাওবাব(Baobab) নামের এক ধরণের গাছ রয়েছে, যেটি কাণ্ডে কয়েক লক্ষ লিটার জল ধারণ করে রাখতে পারে। হিন্দিতে গাছটি ‘গোরক্ষী’ নামেও পরিচিত। বাওবাব গাছটির বিজ্ঞান সম্মত নাম হলো অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটা(Adansonia Digitata)। আঞ্চলিক ভাবে এটি ‘বব’, ‘বোবোয়া’, ‘বোতল গাছ’ এবং ‘উল্টানো গাছ’ হিসাবেও পরিচিত। আরবিতে আবার গাছটি ‘বু-হিবাব’ নামে পরিচিত, যার অর্থ ‘অনেক বীজযুক্ত গাছ’। আফ্রিকাতে এটি ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ট্রি'(The World Tree) হিসাবে পরিচিত।
গাছগুলির বৈশিষ্ট্য কী?
বাওবাব গাছটিকে দেখলে মনে হবে এর কান্ড নীচে আর শিকড় উপরে। গাছটিতে বছরে মাত্র ৬ মাস পাতা থাকে। এই গাছে ৫টি পাপড়ি বিশিষ্ট ফুলও ধরে। ফুলের রং বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে যেমন লাল হলুদ সাদা। অনন্য এই গাছটিকে দেখলে মনে হয় এর শিকড় উপরে আর কাণ্ড নিচে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাওবাব গাছটি কাণ্ডের মধ্যে ১,১৭৩৪৮ লিটার জল ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে। যেকারণে গাছগুলোকে ‘জীবনদানকারী গাছ’ও বলা হয়ে থাকে। এই ধরণের গাছ সাধারণত আফ্রিকার শুষ্ক অঞ্চলে দেখা মেলে। আফ্রিকা মহাদেশের মাদাগাস্কারে(Madagascar) এই প্রজাতির গাছ রয়েছে, যা বহু শতাব্দী প্রাচীন। মাদাগাস্কার দেশের এফেট্টি শহরে বহু শতাব্দী প্রাচীন এই গাছ রয়েছে, যে গাছের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টি-পট বাওবাব'(Tea Pot Baobab)। গাছটির বয়স আনুমানিক ১২০০ বছর। বাওবাব গাছ হিবিস্কাস বা ম্যালো পরিবারেরভুক্ত ৯টি পর্ণমোচী প্রজাতির একটি প্রজাতি। যার দেখা মেলে মাদাগাস্কার সহ অন্যান্য আফ্রিকান দেশেগুলিতে। অস্ট্রেলিয়াতেও এমন প্রজাতির গাছ রয়েছে। মাদাগাস্কারে এই গাছের ৬ রকমের প্রজাতি রয়েছে, যার কান্ডের রং ধূসর-বাদামী থেকে লাল পর্যন্ত হয়ে থাকে। গাছগুলোর ডালপালা ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত বা বোতাম বা নলাকার শঙ্কুর আকারে থাকে।
বাওবাবা গাছের উপকারিতা জেনে নিন
বাওবাবা গাছটি খুবই উপকারী একটি গাছ। আফ্রিকার স্থানীয় মানুষের এই প্রজাতির গাছগুলি ব্যাবহার করে থাকে। এই সব গাছগুলোর পাতা ভোজ্য হয়। গাছের ফল থেকে এক ধরণের সতেজ পানীয় তৈরি করা হয়, যা ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছের ছাল থেকে ফাইবার পাওয়া যায়, যা থেকে দড়ি, কাপড় তৈরি করা হয়ে থাকে। আবার আফ্রিকার অনেক দেশে গাছগুলির ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে।
প্রাকৃতিক কারণে ধ্বংস হচ্ছে গাছ গুলি
তবে গত কয়েক দশক ধরে জলবায়ুর পরিবর্তন গাছ গুলির উপর প্রভাব ফেলেছে। ২০০৫ সাল থেকে আফ্রিকার ১৩ টি প্রাচীনতম গাছগুলির ৯ টি ধ্বংস হয়ে গেছে। এর সাথে আফ্রিকায় এই প্রজাতির যে ৬ টি বৃহত্তম গাছ ছিল তারমধ্যে ৫ টি ধ্বংস হয়ে গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।