বাজারে যাচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের নতুন আলু, দামে খুশি চাষীরা

হাসান তনা, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী):  নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় শুরু হয়েছে আগাম জাতের আলু উত্তোলন। ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি আলুচাষিরা। ফসলের মাঠেই কেজি প্রতি ৭৮-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এই আলু।

কিশোরগঞ্জের এই আগাম আলু মৌসুমের শুরুতেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সবজি বাজারগুলোতে পৌঁছে যাচ্ছে। এতে ক্রেতারা নতুন আলুর স্বাদ গ্রহণ করতে পারছে। গত ১৫-২০ বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে।

গতকাল রবিবার উপজেলার রনচন্ডী ইউনিয়নের কুঠিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই আগাম আলু উত্তোলন করেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খবর পেয়ে ফসলের মাঠেই এই আলু কিনে নিয়েছে ৭৮ টাকা কেজি দরে।

আব্দুল হাই জুমবাংলাকে জানান,  ১০ শতাংশ জমিতে রোপনকৃত আগাম আলু তিনি উত্তোলন করে পেয়েছেন ১৫০ কেজি। এই আলু বিক্রি করে ১১ হাজার ৭০০ টাকা পেয়েছেন।  বীজ, সার, পরিচর্যা ও সেচ বাবদ তার খরচ হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। সে খরচ বাদ দিয়ে ৪ হাজার ২০০ টাকা লাভ হয়েছে তার।

কৃষক আব্দুল হাই এবার মোট দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপন করেছেন।

গত কয়েক বছরের ক্ষতি পুষিয়ে এবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন-এমনটাই আশা করছেন এই উপজেলার আলু চাষীরা।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা আলু চাষে বিখ্যাত। এক সময়ের বালু মাটিগুলো চাষাবাদের ফলে উর্বর মাটিতে পরিণত হয়েছে। আগাম ও নমলা আলু চাষাবাদের পাশাপাশি এ জমিগুলোতে ফলছে চার ফসল। এ এলাকার জমিগুলো সোনা ফলা মাটিতে রূপ নিয়েছে। আগাম আলু হয়েছে এ এলাকার কৃষকের ভাগ্য বদল ও স্বাবলম্বীর ফসলে।

এ এলাকার আলু এখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। আর ক’দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা এখানকার আলু কেনার জন্য হুমরি খেয়ে পড়বে। ট্রাকে ট্রাকে করে এখানকার আগাম আলু যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিকিকিনি হবে দেশের সকল হাট-বাজারে। কৃষকদের হাতে আসবে কাড়ি কাড়ি টাকা। এ ফসলটি এ এলাকার মানুষের শুধু ভাগ্য বা দিন বদলেই করেনি, করেছে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছরে উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ১ শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। দামও ভালো পাচ্ছে চাষীরা। এখন পর্যন্ত পোঁকা ও রোগ বালাই দেখা দেয়নি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফসল ভালো আছে। এবার বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। উৎপাদানের ক্ষেত্রে অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙ্গবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।