রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগে আক্রান্তে অসুস্থ হয়ে পড়েছে গরু। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে ছোট বাছুরের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ায় গরু-বাছুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক খামারিসহ কৃষকেরা। শুধু গোয়ালন্দ উপজেলায় না জেলার প্রতিটি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাসজনিত রোগটি। ঢাকা পোস্টের করা প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভাসহ উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অনেক এলাকাতেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। এলএসডি রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় মশা-মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিষেধক হিসেবে লাম্পি স্কিন ডিজিসের জন্য সরকারি কোনো ভ্যাকসিন নেই। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই ছোট বাছুর। তাই এলএসডি থেকে গবাদিপশু রক্ষায় গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও খামারিদের করণীয় সম্পর্কে সতর্ক করছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ছোট ভাগলপুর এলাকা থেকে সালমা নামে এক নারী তার লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত একটি ছোট বাছুর গরু নিয়ে এসেছেন গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে। এসময় তিনি বলেন, গত ২০ দিন যাবত তার গরুর শরীরে গোটা গোটা উঠেছে। ৪-৫ দিনে বাছুরটি বেশি অসুস্থ হওয়ায় ডাক্তার দেখাতে ভেটরেনারি হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।
উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, আমার বড় একটি গরুর পা ফুলে গেছে, এজন্য পশু হাসপাতালের চিকিৎসককে জানালে তিনি এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেন, বাছুরটির শরীরে জ্বর জ্বর আসতে শুরু করেছে। ডাক্তার দেখে বলেছে, বাছুরটি এলএসডি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের গ্রামে গত এক সপ্তাহে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে তিনজনের গরু মারা যায়।
উজানচরের মজলিশপুর চর গ্রামের কৃষক মোবারক খাঁ বলেন, রাতের বেলায় ভালো গরু গোয়ালে রেখেছি, সকালে দেখি চামড়ায় প্রথমে গুটি বের হয়ে ফোসকা পড়েছে, পরে জ্বরের কারণে কাঁপুনি ও খাবার ছেড়ে দেওয়ায় দুর্বল হয়ে পরে গরু মারা যাচ্ছে। আমার গ্রামে একজনের গরু মারা গেছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিস্পদ কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, লাম্পি স্কিন নামের ভাইরাসজনিত এই রোগটি ছোঁয়াচে। মশা ও মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারিভাবে আমরা এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বেসরকারিভাবে কিছু কিছু ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর দাম বেশি।
তিনি আরও বলেন, এ রোগে বড় গরুর চেয়ে ছোট বাছুর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি সম্পর্কে এলাকার কৃষক ও খামারিদের সতর্ক করতে আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক করছি। সেখানে খামার, গোয়ালঘরসহ আশপাশ এলাকা সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা, মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি গরু ও বাছুরকে ভিটামিনযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ানো, নিমপাতার পানি গরম করে সেই পানি দিয়ে গরু-বাছুরকে গোসল করানোসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।