জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়া জেলা কারাগার থেকে মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ৩টা ৫৬ মিনিটে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি ছাদ ফুটো করে পালিয়েছিলেন। পালানোর ১৪ মিনিট পরই আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আসামিরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার আজিজুল হকের ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম মঞ্জুর (৬০), বগুড়া জেলার সদর থানার মোঃ ইসমাইল শেখের ছেলে মো. ফরিদ শেখ (২৮), কাহালু থানার মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ জাকারিয়া (৩১) ও নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার ইসরাফিল খার ছেলে আমির হামজা (৩৮)।
জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, বালতির হাতল ব্যবহার করে প্রায় এক মাসের চেষ্টায় কারাগারের ছাদ ফুটো করে ওই চার ফাঁসির আসামি পালিয়েছিলেন।
কারাগার থেকে আসামিদের পালানোর ঘটনা বর্ণনা করে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, তারা চারজন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে কাজটি করেছে। আসামিরা অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছে। ভবনটি বেশ পুরোনো হওয়ায় বালতির হাতল সোজা করে ছাদের অংশ ফুটো করেছে। ভবনটিতে কোনো রড না থাকায় ফুটোটি ধীরে ধীরে বড় করেছে। এ ছাড়া পুরোনো চাদর, গামছা ও কাপড় বেঁধে একটি রশি তৈরি করে তা বেয়ে ছাদের ফুটো দিয়ে তারা বেরিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এরপর আসামিরা ছাদ থেকে নেমে প্রিজন সেলের সামনে একটি উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ দিয়ে কারাগারের প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়। তারপর পাশের করতোয়া নদীর ওপর যে ব্রিজ ছিল, সেটি দিয়ে পাশের চাষিবাজারে পৌঁছে যায়। এসময় পুলিশের এসআই খোরশেদ আলম আসামিদের আটক করে।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, এই ভবনে পাশাপাশি চারটি ফাঁসির আসামিদের প্রকোষ্ঠ রয়েছে। এর একটিতে এই চারজন ছিলেন। আসামিরা ছাদের যে জায়গাটি ফুটো করার জন্য বেছে নিয়েছে সেটি বাইরে থেকে দেখা যায় না। কারারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে তারা ওই কর্নারের অংশটি বেছে নিয়েছিল।
সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার পর আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব ছিল তাদের গ্রেপ্তার করা। এটা একটা প্রাথমিক স্বস্তির বিষয়।
বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বগুড়া কারাগার ব্রিটিশ আমলে তৈরি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা গেছে ভবনের অনেক স্থান খারাপ। ওই চার আসামিকে এ বছরের ১ জুন বিভিন্ন কারাগার থেকে বগুড়ায় নিয়ে আসা হয়। আজকে পরিদর্শনের সময় দেখেছি, ওরা পুরাতন এবং নাজুক ছাদের যে অংশে ফুটো করেছে সেখানে কোনো রড ছিল না। চুন-সুড়কি দিয়ে তৈরি ছিল ওটা। আমরা এসব স্থান সংস্কারের কথা বলেছি। এ ছাড়া যেদিক দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে আসামিরা সেখানে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল কায়েসকে প্রধান করে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পিএম ইমরুল কায়েসকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এই কমিটিতে জেলা পুলিশ সুপারের একজন, র্যাব, ডিআইজি প্রিজন, ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ও গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী বা তার প্রতিনিধি থাকবেন।
জেলা প্রশাসক জানান, তদন্তের জন্য কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি, তবে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ডিআইজি প্রিজনকে দেওয়া হবে। তার ওপর ভিত্তি করে কারাগার কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।