পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীতে গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়া দিতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে প্রায় দুই ঘন্টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় যানযটের সৃষ্টি হয়, এতে ভোগান্তিতে পরে যাত্রী ও পথচারীরা।
বরিবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালী চৌরাস্তা এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
জানা যায়, রবিবার সকাল ৯ টার দিকে লেবুখালী সেনানিবাস এলাকা থেকে আবির পটুয়াখালী সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শারমিন জাহান মিম বরিশাল কুয়াকাটাগামী বাস আব্দুল্লাহ পরিবহনে করে পটুয়াখালী আসছিলেন। বাসের সুপারভাইজার মোঃ সুজন মিমের কাছে বাস ভাড়া চাইলে তিনি ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা দিতে চান। আর এখানেই বাজে বিপত্তি হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় বাসের সুপারভাইজার কলেজ শিক্ষার্থী মিমকে রীতিমতো হেনস্থা করেন।
কলেজ শিক্ষার্থীর অভিযোগ করেন এ সময় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। স্টুডেন্ট হইছো তো কি হইছে..? দেশটা কি কিনে ফেলছো..? এই রুটে স্টুডেন্টদের কোনো হাফ ভাড়া নাই। যদি পারো..ফালাইয়া দেখাইস।
এই ঘটনার পর মিম কলেজের আভ্যন্তরীণ মেসেঞ্জার গ্রুপে ঘটনাটি সকলকে জানায়। এর পরই কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সুপার ভাইজার ও ড্রাইভারের বিচারের দাবিতে চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। প্রায় দুইঘন্টা ব্যাপি এই অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকলে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে দীর্ঘ যানযটে সৃষ্টি হয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের নিবৃত করতে জেলা প্রশাসক তাবু হাসনাত মুহাম্মদ আরেফিন, পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদ, সদর সেনাবাহিনী ক্যাম্প এর কর্মকর্তা মেজর মোঃ ফয়সাল, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছুটে আসেন। প্রশাসন, শিক্ষার্থী, বাস মালিক সমিতি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি স্থায়ী সমাধানের শর্তে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শারমিন জাহান বলেন, ‘আমি ওই সুপারভাইজারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এমন শাস্তি দাবি করছি যার পরে নারী শিক্ষার্থীদেরকে কেউ আর বুলিং না করতে পারে। আমরা যেন গণপরিবহনে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারি এবং আমাদের যৌক্তিক দাবি হাফ ভাড়া এইটা যাতে মেনে নেয়া হয়।’
পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনার সমাধানের জন্য ডিসি স্যারের দরবার হলে একটা বৈঠক হবে। আশা করছি পটুয়াখালী-বরিশাল এই রুটের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলের জন্য বাসমালিক সমিতির সাথে একটা স্থায়ী সমাধান হবে।’
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ডিসি স্যারের অফিসে ছাত্র প্রতিনিধি ও বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের পরই একটি সঠিক সমাধান হবে বলে আমি আশা করি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।