জুমবাংলা ডেস্ক : কভিড ১৯ অর্থাৎ নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে। সরকারি নির্দেশনা মানতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এতে বেকারত্ব ও খাদ্য সংকট তীব্র হচ্ছে। এ সংকটের মুখে রয়েছে দেশের অনানুষ্ঠানিক আয়ে নিযুক্ত প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ।
নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর কভিড-১৯-এর প্রভাব নিয়ে সম্প্রতি যৌথ গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)। এসব মানুষের খাদ্য সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন বণিক বার্তাকে বলেন, এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইনকাম সাপোর্ট কর্মসূচি নিতে হবে। মানুষের উপার্জন ৭০ শতাংশ কমেছে, ভোগও কমে যাবে। এ সংকট মোকাবেলায় এরই মধ্যে সরকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেটি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে কাজ করতে হবে। কে পাবে, কে পাবে না, এটা ভাবার সময় এখন না। স্বাস্থ্য ও আর্থিক বিষয়টি আগে নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, যেভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে, সেটা আসলে খুব একটা নিরাপদ পদ্ধতিতে হচ্ছে না। এতে অরো বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এ অবস্থায় নগদ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং চালুর মধ্য দিয়ে খাদ্য সংকটে থাকা কর্মহীনদের কাছে টাকা পৌঁছাতে হবে। তবে এখানে আরেকটি বিষয় ভাবতে হবে যে এতগুলো টাকা যখন ক্যাশ আউট হবে, অর্থের প্রবাহও ঠিক রাখতে হবে। তাছাড়া এজেন্ট পয়েন্টগুলোও সচল রাখতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশে নিয়মিত বেতনভিত্তিক পেশার বাইরে পাঁচ কোটি মানুষ রয়েছে, যাদের সংসার দৈনিক উপার্জনের অর্থে চলে। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এ মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের ঘরে যে অর্থ ছিল, তাতে হয়তো দুই-পাঁচদিন চলার মতো। সরকারের উচিত ছিল আগে থেকেই এসব মানুষের কথা ভাবা। প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে, এনজিও রয়েছে, তাদের সঙ্গে বসে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে কর্মহীন হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য অন্তত আশ্রয়, খাবার ও হাসপাতালের ব্যবস্থা করা।
সংকট উত্তরণের পথ হিসেবে তিনি বলেন, সরকারকে এখন দ্রুত কর্মহীনদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সেটা হতে পারে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটার ভিত্তিতে। পরে ওই কর্মহীনদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত নগদ অর্থ পাঠানো। পাশাপাশি এসব মোবাইল ব্যাংকিং কর্তৃপক্ষকেও একটা দায়িত্ব নিতে হবে। সার্ভিস চার্জ ছাড়া কোনো প্রকার ইন্টারেস্টবিহীন এ অর্থ লেনদেনের সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে না খেয়েই দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা যেতে পারে।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel