জুমবাংলা ডেস্ক : বিএনপি কর্মীদের নেতৃত্বে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জলমহালের মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় মুহূর্তেই ৫০ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায় তারা।
এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কোনো বাধা দেয়নি। পুলিশ মাছ লুটপাটকারীদের কাছ থেকে আর্থিক সুযোগ নিয়ে মাছে লুটে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তবে, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, বিএনপির কেউ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দিনদুপুরে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার এসএমপির আওতাধীন শ্রীরামপুর বাইপাসে সরকারি মেদ্দি বিলে এ লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি কর্মী জামাল আহমদ ও সুহেল মিয়ার নেতৃত্বে এ লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সকাল ৬টা থেকে মাছ শিকারের সব ধরনের সরঞ্জামাদি নিয়ে মাছ ধরার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন তারা। মোগলাবাজার থানা সূত্রে জানা যায়, জামাল আহমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, বিলটি প্রতি বছর ইজারা দেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু গত ২ বছর থেকে ইজারা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। এই সুযোগে সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় বিএনপির লোকজন বিল থেকে দিনে রাতে মাছ শিকারে করে যাচ্ছেন। স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের লোকজন বিলের মাছ শিকার বন্ধে উদ্যোগী হলেও তাদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে বিলের মাছ রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলেও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রশাসন কোনো ভূমিকা নেয়নি। এমনকি মোগলাবাজার থানা পুলিশ বিলের পাশে অবস্থান করলেও অবৈধভাবে মাছ শিকারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তথ্য রয়েছে পুলিশ মাছ লুটপাটকারীদের কাছ থেকে আর্থিক সুযোগ নিয়ে মাছে লুটে সহায়তা করেছে।
মৎস্যজীবী দিলিপ জানান, মাছ রক্ষায় তারা প্রশাসনের দরজায় বারবার গেছেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যে কারণে প্রশাসনের সামনে সরকারি সম্পদ হরিলুট করল দুর্বৃত্তরা। এতে পুলিশসহ প্রশাসনের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এখন এই বিলের মৎস্য সম্পদ হুমকির মুখে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জামাল আহমদ কালবেলাকে বলেন, আমার ওপর যে কথাটি উঠছে তা একেবারে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রয়োজনে আপনারা সরজমিনে তদন্ত করতে পারেন৷ আমি সাবেক মেম্বার ছিলাম, তাই হয়ত কিছু কুচক্রী মহল এরকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভিডিওতে তিনি আছেন বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি ভিডিওতে আমি থেকে থাকি তাহলে তো আমি দোষী৷ আমি এরকম কোনো ভিডিওতে নাই, সেটা আমি শতভাগ নিশ্চিত। যারা আমার ওপর এরকম অপবাদ দিয়েছে আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী। আমি কুছাই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ও বিএনপির কোনো পদে নেই, সাধারণ একজন মানুষ।
এ বিষয়ে মোগলাবাজার থানার ওসি ফয়সল মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আছে। বিলটি লিজ আছে বলে উপজেলা প্রশাসনের কাছে কোনো তথ্য নেই। এলাকার লোকজন মাছ মেরে খেয়েছে, পুলিশের এখানে কিছু করার নেই। লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ দেয়নি। দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, বিএনপি কোনো চাঁদাবাজ, লুটপাটকারীকে আশ্রয় দেয় না। মানুষের জানমালের ক্ষতি হয় এমন লোক বিএনপি করতে পারবে না। যদি কেউ করে থাকে তাকে আইনের আওতায় নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।