নরসিংদীর শেখেরচর বাসস্ট্যান্ডে নির্বাচনী উত্তেজনা থেকে শুরু হওয়া বিতণ্ডা মুহূর্তেই রূপ নেয় সহিংসতায়। বিএনপি ও জামায়াতের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। পুরো এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।
নরসিংদীর সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের শেখেরচর বাসস্ট্যান্ডে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আকস্মিক এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হন এবং পরিস্থিতি কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, জামায়াতের নির্বাচনী সভা শেষে ফেরার পথে তাতীদলের সভাপতি বখতিয়ার হোসেন এবং জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আমজাদ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সূত্রপাত হয়। কথা–কাটাকাটির পরপরই দুই পক্ষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা আমজাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “শুরু থেকেই বিএনপির কিছু নেতাকর্মী সভায় বাধা সৃষ্টি করছিলেন। সভা শেষে ফেরার সময় তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।”
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে সাতজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাত ৮টার দিকে জেলা শহর ও পলাশে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের দাড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আমজাদ হোসাইন জানান, শুরু থেকেই বিএনপির কিছু নেতাকর্মী ওই সভায় বাধা সৃষ্টি করছিলেন। তার বক্তব্য চলাকালীন মঞ্চের পেছনে গিয়ে গালিগালাজও করেন তারা। স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে প্রথমে তারা সেখান থেকে সরে গেলেও সভা শেষে ফের ৭০/৮০ জন বিএনপির নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরমধ্যে ৭ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মেহেরপাড়া ইউনিয়ন তাঁতীদলের নেতা বখতিয়ার হোসেন, যুবদল নেতা ইফতিখার আলম, শাহরিয়ার, সিয়ামসহ অন্তত ৪০ জন এ হামলা করে বলে জানান তিনি।
নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাওয়া হলেও মাধবদী থানা পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে এসব হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো জামায়াতের হামলায় বখতিয়ার হোসেন গুরুতর আহত সহ আরও ৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদ মিয়া। এ বিষয়ে আইনগত সহায়তা নেবেন বলে তিনি জানান।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়জন আহত হয়েছেন সে বিষয়ে জানা নেই। উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



