আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনে কয়েকদিন ধরে কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর কয়েকটি বড় বড় শহরে কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গুয়াংজুর বেশ কটি এলাকায় বুধবার বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। ঐ শহরে পর পর দুদিন সরকারের জিরো-কোভিড নীতি প্রত্যাহারের দাবিতে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। গুয়াংজুওেত সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনের ওপর থেকে সরকারের নির্ধারিত স্থাপনায় গিয়ে কোয়ারেন্টিন করার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তারা নিজের বাড়িতেই কোয়ারেন্টিন করতে পারবে।
সাংহাই, চোংকিং, এবং রাজধানী বেইজিংয়েও কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে। এমনকি বেইজিংয়ের একটি মহল্লায় মৃদু উপসর্গে ভোগা কোভিড রোগীদের নিজেদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে রয়টার্স সংবাদ সংস্থা খবর দিচ্ছে। কদিন আগেও এমন সিদ্ধান্তের কথা চীনে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
চীনা কর্মকর্তাদের বক্তব্য বিবৃতি থেকেও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সরকার তাদের জিরো-কোভিড নীতি শিথিল করার পথ নিয়েছে। চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী সুন চুনলানকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় খবর বেরিয়েছে কোভিডের অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং সেইসাথে টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ায় চীনে এখন “নতুন পরিস্থিতি” তৈরি হয়েছে।
সরকারি মিডিয়ায় খবর বেরিয়েছে উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে কোভিডের অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দুর্বল হয়ে পড়েছে, ফলে এই ভাইরাস আর মারাত্মক কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে না। তবে বিধিনিষেধ এমন সময় শিথিল করা হচ্ছে যখন চীনে কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। এমনকি গুয়াংজু এবং সাংহাইয়ের বেশ কিছু মহল্লায় গত কদিনে সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে পশ্চিমাঞ্চলীয় উরুমকি শহরে কদিন আগে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আগুন লেগে ১০ জনের মৃত্যুর পর বিভিন্ন শহরে সরকারের জিরো-কোভিড নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় যে নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখা গেছে, তার প্রেক্ষাপটেই সরকার নমনীয় হচ্ছে। চীনা উপ-প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে কড়াকড়ি শিথিলের ইঙ্গিতের পাশাপাশি সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকেও একই ধরণের কথা শোনা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় একটি মিডিয়ার সাবেক সম্পাদক হু শিজিন, যিনি টুইটারে কম্যুনিস্ট পার্টির পক্ষে বিভিন্ন বিবৃতি প্রচার করেন, লিখেছেন কড়াকড়িতে এই শিথিলতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে “ব্যাপক মাত্রার লক-ডাউন আরোপের পন্থা থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হচ্ছে।
চীন গত কয়েকদিনে যে মাত্রায় সংক্রমণ হয়েছে তা প্যানডেমিক শুরুর পর সর্বোচ্চ। বুধবারও ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ কোভিড পজিটিভ হিসাবে শনাক্ত হয়েছে। অবশ্য ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশে এই সংখ্যা তেমন কিছু নয়। চীনে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৫,২০০। অর্থাৎ প্রতি দশ লাখে তিনজন মারা গেছে। সেই তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দশ লাখে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০০। ব্রিটেনে এই সংখ্যা ২৪০০ জন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।