তখন এশিয়া মাইনরের উত্তরে অবস্থিত ছিল বিখ্যাত এক নগরী। সৌন্দর্যমণ্ডিত এই নগরীর নাম ছিল ‘ট্রয়’। জনশ্রুতি অনুযায়ী, ট্রয় নগরীর সুবিশাল প্রাচীর তৈরিতে হাত লাগিয়েছিল খোদ দেবতারাও। প্রাচীর নির্মাণের কাহিনীটাও বেশ চমৎকার। দেবরাজ জিউস একবার ষড়যন্ত্রের অপরাধে সঙ্গীতের দেবতা অ্যাপোলো এবং সমুদ্র দেবতা পসেইডনকে এক বছরের জন্য অলিম্পাসের চূড়া থেকে নির্বাসিত করে দিলেন। ফলে মর্ত্যলোকে এসে ঠাঁই নিলেন দেবতা অ্যাপোলো এবং পসেইডন।
ওদিকে ট্রয়ের ধ্বংস কামনা করে সমুদ্র থেকে ‘ট্রোজান সিটাস‘ নামে বিশালাকার এক দানব পাঠালেন পসেইডন। লাওমেডন সেই দানব বধের জন্য সৈন্য পাঠালেও আদতে কোনো লাভ হয়নি। ওই দানবের সামনে একমুহূর্তও টিকতে পারেনি লাওমেডনের ফৌজ। দানবটা একে একে নগরবাসীর বাড়িঘর, শস্য, ফসল সবকিছুই ধ্বংস করে ফেলতে লাগল।
বীরযোদ্ধা হেরাক্লিস (হারকিউলিস) তখন রাজা অ্যারিসকাসের রাজদরবার থেকে সঙ্গীদের সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তার জাহাজ ট্রয় নগরীর বন্দরে এসে থামার পর হঠাৎ তিনি দেখলেন, রাজকন্যা হেসিওনিকে নিয়ে সমুদ্রপাড়ে বিরাট শোকের মাতম চলছে। বাদশাহ লাওমেডন এবং তার রানী অঝোরে অশ্রুবর্ষণ করে যাচ্ছেন।
কৌতূহলপরবশ হয়ে সমাগমের দিকে এগিয়ে গেলেন হেরাক্লিস, ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলেন লাওমেডনের কাছে। বাদশাহর কাছ থেকে সমস্ত বিবরণ জানার পর ওই দানবের সাথে যুদ্ধ লড়তে সম্মত হলেন হেরাক্লিস।
যুদ্ধে লড়ার আগে হেরাক্লিস শর্ত জুড়ে দিলেন, সেই দানবকে বধ করলে তাকে যেন সম্রাটের সেই স্বর্গীয় ঘোড়া জোড়া উপহার দেয়া হয়। রাজা সানন্দে মেলে নিলেন সেই শর্ত। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলেন হেরাক্লিস।
রো ট্রয় নগরীকেই চারদিক থেকে অবরোধ করে রাখলেন হেরাক্লিস। তবে তাকে বেশিদিন এ নগরী অবরোধের বেষ্টনীতে রাখতে হয়নি। যুদ্ধের পর রাজার ছোট সন্তান পোডারসেস বাদে আর কেউ বেঁচে নেই তখন। যুদ্ধের পর সকল বন্দীদের সামনে এনে দাঁড় করালেন হেরাক্লিস। বন্দীদের মধ্যে রাজকুমারী হেসিনওনিও ছিল।
রাজা প্রায়াম এবং রানী হেকুবার কোল আলো করে মোট উনিশজন সন্তান জন্ম নিয়েছিল।তবে পৃথিবীজোড়া খ্যাতি অর্জন করতে পারা একমাত্র সন্তান ছিল হেক্টর। মহাবীর অ্যাকিলিসের নাম নিলে হেক্টরের নামও শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারণ করা হয়। তার যুদ্ধনীতির জ্ঞান এবং যুদ্ধকৌশলে পারদর্শিতা তৎকালীন ট্রয়ের আর কারও ছিল না। মনের উদারতা, এবং আনুগত্যেও তিনি সকলের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।