আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাংকতো লুসিও দে কুম্বোস্কোরো ইতালির একটি ছোট গ্রামের নাম। ভালোবেসে তাকে অনেকে বলেন ‘ইতালির লিটল প্রোভেন্স’। প্রায় সব অর্থেই একটি বিচ্ছিন্ন জনপদ এটি। ইতালি ও ফ্রান্সের পিডমন্ট অঞ্চলের মধ্যকার সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই গ্রাম।
সেখানে যেতে চাইলে আপনাকে হয় প্রথমে বিমানে তুরিন শহরে গিয়ে পরে একে একে ট্রেন ও বাস ধরতে হবে। আর না হয় গাড়ি চালিয়ে প্রোভেন্স থেকে পাড়ি দিতে হবে দক্ষিণমুখে। বিচ্ছিন্নতাই লিটল প্রোভেন্সের মূল বিশেষত্ব নয়, তাহলে এ জনপদ নিয়ে আলোচনার বিশেষ কিছুই থাকত না। এ গ্রামের রয়েছে এক অভিনবত্ব। এখানকার কেউই দেশের মূল ভাষায় কথা বলে না। ব্যাপারটা এমনই অস্বাভাবিক যে সাংকতো লুসিও দে কুম্বোস্কোরোতে বেড়াতে আসা মানুষ সঠিক দেশে এসেছে কি না, তা নিয়েই ধন্দে পড়ে যেতে পারেন। স্থানীয় ইতালীয়রা ‘আরিবেদারচি’-এর পরিবর্তে অপরিচিত ‘আরভিয়েরে’ বলে বিদায় জানালে তাদের তো এ হাল হতেই পারে!
কুম্বোস্কোরোর অফিশিয়াল ভাষা হলো প্রোভনসাল। প্রাচীন অক্সিটানের একটি মধ্যযুগীয় নব্য-লাতিন উপভাষা। ফ্রান্সের অক্সিটানিয়া অঞ্চলজুড়ে ব্যবহৃত হয় অক্সিটান ভাষা।
গ্রামটিতে থাকে জনাতিরিশেক মানুষ। স্থানীয়দের জন্য জীবনযাত্রা এখানে মোটেই সহজ নয়। গ্রামের বাসিন্দারা মূলত মেষপালক। আশপাশে ঘুরে বেড়ানো নেকড়ের আক্রমণ থেকে নিজেদের ভেড়ার পাল আগলে রাখা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকে তারা।
শীতকালে অনেক সময় কয়েক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ থাকে না। এখানে ইন্টারনেট সংযোগের অবস্থাও ভালো নয় মোটেই।
তবে গ্রামটির শান্ত, সবুজ ঘাসে ছাওয়া পাহাড়ি ঢাল আর উজ্জ্বল বেগুনি ল্যাভেন্ডারে ঢাকা মাঠ পর্যটকের মন কেড়ে নেয়। বিশেষ করে যারা কিছু সময়ের জন্য সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন নিরিবিলি থাকতে চান জায়গাটা তাঁদের পছন্দ না হয়ে যাবেই না। এর আলপাইন চূড়াগুলো থেকেও দেখা যায় কথা হারিয়ে ফেলার মতো দৃশ্য। সেখান থেকে দৃষ্টিসীমা চলে সেই কোত দাজুর পর্যন্ত প্রসারিত। এখানে নেই বার, সুপারমার্কেট আর জমকালো রেস্তোরাঁর বাড়াবাড়ি। এলাকার সামাজিক গুঞ্জন সীমাবদ্ধ থাকে গ্রামে মাঝে মাঝে আয়োজিত লোকজ অনুষ্ঠান-আয়োজনের মধ্যে। স্থানীয়রা প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চালায় ধীরগতির, সরল জীবনধারা।
মেষপালক অ্যাগনেস গ্যারোন কুম্বোস্কোরো গ্রামের অল্পসংখ্যক বাসিন্দার একজন। তাঁর সঙ্গে কথা বললে পাওয়া যাবে এ গ্রামের প্রাণের স্পন্দন। ‘আমাদের কাছে কোনো টিভি নেই। জীবনে কখনোই ছিল না। আগে কখনোই যা পাননি, তা তো আপনি মিস করবেন না। একটানা ১৫ দিন বিদ্যুিবভ্রাট হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ’
সূত্র : সিএনএন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।