জুমবাংলা ডেস্ক : গত দুই মাসে অর্ধ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ পরিশোধ করার পরও বিগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের নেয়া মোটা অংকের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কঠিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মোটা অংকের বকেয়া বিদেশি ঋণের বিপরীতে ৭,০৪১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার সুদ এবং ঋণ পরিশোধ করেছে, যা সরকারের স্থিতিপত্রকে নেতিবাচক গতিতে ফেলেছে। উল্লেখ্য, সরকার বকেয়া ঋণের বিপরীতে বর্তমান অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং জাইকাসহ বিদেশি ঋণদাতাদের কাছ থেকে বর্তমান সরকার ৫,৪৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার ঋণ পেয়েছে।
২০২৪ সালের অর্থবছরে বাংলাদেশ বিভিন্ন মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে ৪,৭৮৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে এবং বৈদেশিক সাহায্য পেয়েছে ৮,৮৩২ কোটি ৭৬ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৩ টাকা।
ইআরডির পরিসংখ্যান অনু্যায়ী, জুলাই-আগস্ট অর্থবছরের বৈদেশিক সাহায্য বিতরণ ৬১.২৮ শতাংশ কমে ৫,৪৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমান অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য ৮,৮৩২ কোটি টাকার ওপর ঋণ ও অনুদান প্রদান করেছে।
২০২৪ সালের আর্থিক বছরের ১২ মাসের সময়কালে, সরকার মোট বিদেশি ঋণের সুদ এবং মূল হিসাবে প্রায় ৪০,১১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।
যদিও ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে, ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, বৈদেশিক সাহায্য বিতরণ এবং প্রতিশ্রুতি খুব বেশি বাড়েনি।
অনেক অ-রেয়াতি মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের (এমএলটি) জন্য উচ্চ হারের সুদ প্রদান এবং কিছু বড় ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়া ২৪ সালের অর্থবছরের জুলাই-মে সময়কালে বৈদেশিক ঋণ পরিষেবাকে বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ইআরডি কর্মকর্তারা।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বকেয়া বিদেশি ঋণের বিপরীতে ঋণ পরিশোধ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে প্রধানত রেকর্ড সর্বোচ্চ পরিমাণ সুদ পরিশোধের কারণে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ের মধ্যে ৭,০৪১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার ঋণের মধ্যে ২,০৭৪ কোটি ৭২ লাখ টাকার সুদ এবং অবশিষ্ট ৪,৯৬৭ কোটি ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৮ টাকার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।
ইআরডির ডাটা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২৪ সালের অর্থবছরের একই সময়ে বাংলাদেশ সুদ হিসেবে ১,৭৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার ৪১ টাকা এবং মূলধন হিসেবে ৩,০৩৬ কোটি ৯১ লাখ ৬৮ হাজার ৯০৯ টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে।
ইআরডির ডাটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এমএলটি ঋণের বৃদ্ধি ও উচ্চতর অর্থপ্রদানের প্রবণতা ইতোমধ্যেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করেছে।
২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনু্যায়ী, বহিরাগত উৎসের থেকে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের ঋণ আনুমানিক ১১,৯৫১ কোটি ১৯ লাখ টাকার রেকর্ড করা হয়েছে।
ইআরডির তথ্য থেকে দেখা যায়, উন্নয়ন অংশীদাররা জুলাই-আগস্ট সময়ের মধ্যে ২৪০ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯০৪ টাকা মূল্যের ঋণ এবং অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা ২৪ সালের অর্থবছরের একই সময়ে ১৩ হাজার ৬২৪ কোটি ৩৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকার মূল্যের ঋণ ও অনুদান নিশ্চিত করেছেন বলে পরিসংখ্যান নিশ্চিত করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।