জুমবাংলা ডেস্ক: প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও সারা বিশ্বে বাড়ছে ভ্রমণ প্রবণতা৷ আগের বছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ সালে প্রায় ৬ ভাগেরও বেশি মানুষ দেশের বাইরে ভ্রমণ করেছেন, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ আর উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ মানুষের পছন্দের শীর্ষে ছিল।
এ বছর ভ্রমণের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশা করছেন পর্যটন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পর্যটন মেলা আইটিবি বার্লিনের ৫২তম আসরে এমনটিই বলা হয়েছে৷
গরমে সূর্য, বালি আর জলের আবাহন পেতে বাল্টিক সাগরের জুড়ি নেই৷ কেবল জার্মানিতেই দুই হাজার ২০০ কিলোমিটারের উপকূল রয়েছে এই সাগরের৷ জেনে নিন, কেন যাওয়া দরকার জার্মানির অন্যতম এই পর্যটন কেন্দ্রে৷
১৯৬৬ সালে খুব ছোট পরিসরে যাত্রা শুরু করে বার্লিনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আকর্ষণ করার এই উদ্যোগ৷ সে বছর মিশর, ইরাক, জার্মানি, গিনি ও ব্রাজিলের ৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এখানে৷ মাত্র ৫৮০ বর্গমিটারের এই আয়োজনে ২৫০ জন বাণিজ্যিক পরিদর্শক অংশ নেন৷
পরের বছর বিভিন্ন কারণে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত করা যায়নি৷ তবে তার পরবর্তী বছরগুলোতে আস্তে আস্তে এটি বড় হতে থাকে৷ মাত্র পাঁচটি দেশকে নিয়ে সেই আয়োজন এখন পাঁচটা মহাদেশের ১৮০টিরও বেশি দেশের আয়োজনে পরিণত হয়েছে৷ এ বছর ১০ হাজারেরও বেশি স্টল বসেছে৷ বাণিজ্যিক পরিদর্শক এসেছেন প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার৷
১ হাজারেরও বেশি বিশ্বের শীর্ষ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে৷ মেলার পরিসর এখন ১ লাখ ৬০ হাজার বর্গমিটার৷ গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া পাঁচ দিনের এ আয়োজনে আর্থিক লেনদেন হয়েছে প্রায় ৭শ’ কোটি ইউরো বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা৷
এবারের আয়োজনে বিশ্বের সব নামকরা টুরিজম এজেন্সি বা অপরেটররা যেমন অংশ নিয়েছে, তেমনি সরকারি বেসরকারি এয়ারলাইন্স, ক্রুজ, বিমানবন্দর, শহর ও রাজ্য কর্তৃপক্ষ, দেশের প্রতিনিধিরা এসেছেন৷ বড় বড় হোটেল, রিসোর্টগুলোও নিজস্ব স্টল নিয়ে এসেছে৷
পর্যটক ও পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সবাই তাদের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর সংস্কৃতি, খাবার, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন৷ সাধারণ ভ্রমণপিপাসু মানুষও এসেছেন অনেক৷ তারা তাদের পছন্দের জায়গাগুলোতে ভ্রমণ করবার জন্য তথ্য সংগ্রহ ও অপারেটরদের অফারগুলো খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছেন৷ এছাড়া এমন একটি আয়োজনে অনেক দেশ ও অঞ্চল সম্পর্কেও তারা জানতে পেরেছেন৷
এছাড়া এই আয়োজনে বিভিন্ন পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেপার প্রেজেন্টেশন ও আলোচনা হয়েছে৷ সেগুলোতে পর্যটন খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনার নানা দিকও উঠে এসেছে৷
বিশ্বজুড়ে অনেক জায়গায়তেই সন্ত্রাস, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও মানুষের ভ্রমণ প্রবণতা বাড়ছে৷ যদিও এসব কারণে অনেকেই তুলনামূলক ‘নিরাপদ’ জায়গায় ভ্রমণ করারই পক্ষপাতী৷ ওয়ার্ল্ড ট্র্যাভেল মনিটরের গবেষণা বলছে, ২০১৮ সালে অন্তত ৩৩ ভাগ মানুষ তাদের ভ্রমণের স্থান বদলে নিরাপদ জায়গায় ভ্রমণ করেছেন।
সেখানে পছন্দের তালিকায় উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপই ওপরের দিকে অবস্থান করছে৷ ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত হিসেবে দেখা যায় উত্তর অ্যামেরিকায় মানুষের ভ্রমণ প্রবণতা আগের বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেড়েছে, ৭ দশমিক ৫ ভাগ৷ ইউরোপে বেড়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ৷ ল্যাটিন অ্যামেরিকাতেও মানুষের আগ্রহ বেড়েছে ৫ ভাগ৷
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে৷ এখানেও বেড়েছে ৫ ভাগ৷ মূলত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় পর্যটকদের আগ্রহ বেশি৷ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, ভূটান ও মালদ্বীপে পর্যটকদের আগ্রহ অনেক বেশি৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।