জুমবাংলা ডেস্ক : কয়েক বছর ধরে খাল-বিল ও নদী-নালায় রানি মাছের তেমন দেখা মেলেনি। তবে এবার বর্ষা মৌসুমে বেশি বৃষ্টিপাতের ফলে এ মাছের দেখা মিলছে প্রতিনিয়ত।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, এবার মৌলভীবাজার জেলার হাওরগুলোতে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিশেষ করে হাকালুকি ও কাউয়াদীঘির হাওর এলাকায় বিলুপ্তপ্রায় সুস্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন ‘রানি মাছ’ অনেক ধরা পড়ছে। এছাড়া সদর উপজেলার শেরপুরের কুশিয়ারা নদীতে জেলেদের ভেলজালে ধরা পড়ে এই মাছ। এসব নদী ও হাওর পারের জেলেদের কাছ থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা অন্যান্য মাছের সঙ্গে রানি মাছ পশ্চিম বাজারে চড়া দামে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন।
শহরের বেরিরচর এলাকার মাছ ব্যবসায়ী সুন্দর মিয়া জানান, একসময় হাকালুকি-হাইল হাওর ও কাউয়াদীঘি হাওরে এই মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। তবে গত কয়েক বছর ধরে জলাশয় ও বিল মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে শুকিয়ে মাছ ধরায় এই রানি মাছসহ অনেক প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
মৎস্য ব্যবসায়ী মধু মিয়া জানান, বাজারে রানি মাছের চাহিদা প্রচুর। এ মাছ বাজারে নিয়ে আসার পরপরই দেখার ও নেওয়ার জন্য ভিড় জমে যায়। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায়। ক্রেতারা কেজি হিসেবেই এ মাছ ক্রয় করে থাকেন। প্রতি কেজি ৫০০-৬০০ টাকা করে বিক্রি হয়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এরই মধ্যে এ মাছকে ‘বিপন্ন’ তালিকাভুক্ত করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, আমাদের দেশে দুই প্রজাতির রানি মাছ রয়েছে। এ প্রজাতির মাছের দেহের রং হলুদ এবং কালচে রঙের লম্বা দাগ থাকে। এ মাছের দেহ হলুদ বা হলদেটেও হয়। তবে এর দেহে ইংরেজি ‘ওয়াই’ বর্ণমালার মতো কালো দাগ থাকে এবং দুটি দাগের মধ্যবর্তী অংশে একটি কালো দাগ অবস্থিত।
রানি মাছের দেহ চ্যাপ্টা ও লম্বাটে। এই মাছটি প্রায় তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এ মাছ একসময় চলনবিলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। মিঠা পানির এই মাছ বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ভুটান, ও মিয়ানমারের খাল-বিল, নদী-নালা, হাওর-বাঁওড়ের পরিষ্কার পানিতে পাওয়া যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।