স্পোর্টস ডেস্ক: গতিময় কোনো পেসার নেই বাংলাদেশের। নিজেদের ইতিহাসে হাতেগোনা কয়েকজন পেসার ছিল বাংলাদেশের যাদের গতি ১৪০ এর উপরে। এবারের বিশ্বকাপে যারা খেলেছেন তাদের মধ্যে শুধুমাত্র রুবেল হোসেনেরই ১৪০ এর উপরে বল করার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু বৈচিত্রের অভাবে সেটাও দেখাতে পারেননি তিনি।
ইংল্যান্ডের উইকেটে মাশরাফি-সাইফউদ্দিনদের বল ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য দারুণ উপহার। সাইফউদ্দিনের বলে উইকেট এসেছে ঠিকই কিন্তু খরুচে হিসেবে তিনিও কম খ্যাত নন। যেখানে মিচেল স্টার্ক, জফরা আর্চার, লকি ফার্গুসনরা গতি ও সুইং দিয়ে ব্যাটসম্যানদের ঘাম ঝরাচ্ছেন। মোহাম্মদ আমির নানা বৈচিত্র্যে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করেছেন। সেখানে টাইগারদের গতি-বৈচিত্র্যহীন বোলিং বেশ হতাশ করে তুলেছে বাংলাদেশকে। সঙ্গে ক্যাচ মিসের মহড়া আর বাজে ফিল্ডিং তো ছিলই।
পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই বুঝা যায় বিশ্বকাপে কতটা ব্যর্থ ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। টুর্নামেন্টে মোট ৮ বোলার ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ। যারা আট ম্যাচে প্রতিপক্ষের মোট ৫৯টি উইকেট নিয়েছেন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ টি উইকেট এসেছে তিনবার। দুবার নিয়েছেন মোস্তাফিজ, আরেকবার সাকিব। বোলাদের মধ্যে প্রাপ্তি মোস্তাফিজের বোলিং। কারণ বাংলাদেশের হয়ে সেরা বোলিংয়ের পাশাপাশি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেরা বোলার হিসেবে টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন তিনি।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপে বাংলাদেশি বোলারদের পারফরম্যান্স :
মুস্তাফিজুর রহমান
বিশ্বকাপে আট ম্যাচে মোট ২০টি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। তার সেরা বোলিং ফিগার ৫/৫৯। ওভার প্রতি দেশসেরা এই বোলারের ইকোনোমি ৬.৭০। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ দুইবার ৫ টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া টুর্নামেন্টেরও দ্বিতীয় সেরা বোলার হিসেবে বিশ্বকাপ শেষ করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের তালিকায় প্রথম অবস্থানে আছেন অস্ট্রেলিয়ার বোলার মিচেল স্টার্ক।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন
বিশ্বকাপে দেশের হয়ে মোট সাতটি ম্যাচ খেলেছেন সাইফউদ্দিন। সাত ম্যাচে তার সংগ্রহ ১৩ টি উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ৩/৭২। তবে তার ইকোনোমি অনেক। পুরো আসরে ৫৮ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪১৭ রান দিয়েছেন তিনি। গড়ে ৩২.০৭ সহ ওভার প্রতি ইকিনোমি ছিল সাতের উপর। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় ১১ তম অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করেছেন সাইফউদ্দিন।
সাকিব আল হাসান
ছন্দশীল ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দারুণ ছিলেন সাকিব আল হাসান। টুর্নামেন্টে ৮ ম্যাচে মোট ১১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেরা বোলিং ফিগার ৫/৩৯। ৩৬.২৭ গড়ে ইকোনোমি ৫.৩৯। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় ১৮ তম অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
মেহেদী হাসান মিরাজ
দেশের হয়ে সাত ম্যাচ খেলে ৬ টি উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। সেরা বোলিং ফিগার ২/৪৭। ৫৬.৮৩ গড়ে বোলিং ইকোনোমি ৫.০৮।
সৌম্য সরকার
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বেশ কাজে লেগেছে এই পার্টটাইম বোলারের। আট ম্যাচে চারটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেরা বোলিং ফিগার ৩/৫৮। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৬.৫০ রান।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত
সাত ম্যাচে মোসাদ্দেকের সংগ্রহ ৩ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ২/৩৩। ওভার প্রতি ৫.৯৭ রানের পাশাপাশি স্পিন অলরাউন্ডারের গড় ৭১.৬৬।
মাশরাফি বিন মুর্তজা
৫০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা বোলার মাশরাফি বিন মর্তুজার বিশ্বকাপ কেটেছে খুব বাজে। পুরো টুর্নামেন্টে দেদারসে রান বিলিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। যার বিপরীতে নিজের ঝুলিতে সংগ্রহ করেছে মাত্র ১ উইকেট।
রুবেল হোসেন
বিশ্বকাপে দেশের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান রুবেল হোসেন। দুটি ম্যাচেই বেশ খরুচে ছিলেন এই পেসার। ৭.৭০ গড়ে দুই ম্যাচে তার সংগ্রহ মাত্র ১ উইকেট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।