জুমবাংলা ডেস্ক : মাত্র দুই মাস আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন বীথি রানী। সুখের সংসার পেতেছিলেন মহাখালীর সাততলা বস্তিতে। আগুন তার সংসারের সব পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। আজ সকাল ৭টার দিকে পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্রের ভেতর থেকে বিয়ের বেনারসি শাড়িটি বের করেন তিনি।
শাড়িটি পুড়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন বিথী রানী। তিনি বলেন, তার ঘরে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। আগুন সব কেড়ে নিয়েছে। আজ দিনে কী খাবেন সেই টাকাও তাদের কাছে নেই।
মহাখালীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া। গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঘুমিয়েছিল সে। রাতে ঘরে আগুন লাগার পর পরিবারের সবার সঙ্গে বের হয়। কিন্তু বইগুলো সঙ্গে নিতে পারেনি।
আজ সকালে ঘরে ফিরে বইগুলো খুঁজে বের করে তানিয়া। দেখা যায়, অধিকাংশ বই পুড়ে গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তানিয়া তার মাকে বলে, ‘আমার বইগুলো পড়ে গেছে মা।’
মহাখালীর সাততলা বস্তিতে আগুনে রায়হান মন্ডলের মুদি দোকান এবং বসতঘর পুড়েছে। আজ সকালে সূর্য ওঠার পর দোকানের ভেতর পুড়ে যাওয়া মালামাল ঘাঁটাঘাঁটি করছিলেন তিনি।
রায়হান বলেন, ‘এই বস্তিতে দোকানের পেছনেই আমার বসতঘর ছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাত খাচ্ছিলাম। এ সময় বস্তিতে আগুন-আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবাই দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। মুহূর্তমধ্যে পুরো বস্তিতে আগুন লেগে যায়। আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্থা বস্তিতে ছিল না। কোনোক্রমে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই। সকালে সূর্য ওঠার পর দেখি বসতঘর এবং দোকানের কোনো অস্তিত্ব নেই।’
ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, সাততলা বস্তির ওই অংশের ৬০ থেকে ৭০টি দোকান পুড়ে গেছে। তবে আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি, তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।