জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনারা রাজনীতি বন্ধ করার নামে অন্ধকারের রাজনীতির চাষাবাদ শুরু করেছেন। বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ অথচ সেখানে নিষিদ্ধ রাজনীতির নমুনা প্রত্যেক ক্ষণে ক্ষণে আমরা দেখতে পাচ্ছি।
রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, শুধু বুয়েট কেন পৃথিবীর যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। তরুণদের মিথস্ক্রিয়া করার অধিকার রয়েছে। বরং আপনারাই তো অধিকার বন্ধ করে দিয়েছেন। ছেলেমেয়েদের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার ও রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা প্রকাশের অধিকার আপনারা বন্ধ করে রেখেছেন।
বুয়েট শিক্ষার্থী রাব্বির সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সাদ্দাম হোসেন বলেন, যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে সংখ্যায় যদি সে একজন হয়, আমরা তার কথা মেনে নেব। রাব্বি যদি বুয়েটে একা লড়াই করে, স্বাধীনতাবিরোধী-মৌলবাদী-জঙ্গিবাদী শক্তির প্রেতাত্তারা যতজনই হোক, রাব্বির জন্য, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য, মৌলিক মানবাধিকারের জন্য, সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লড়াই করে যাবে। কী অপরাধ করেছে আমাদের রাব্বি? তার অপরাধ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে যাদের অধিকার রক্ষার জন্য আমাদের পিতার লড়াই করে গেছেন, তাদের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছে। স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছে, এগুলোই রাব্বির অপরাধ। এজন্যই তার সিট বাতিল করা হয়েছে। এই দেশের মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার রক্ষার জন্য যে সংগঠনের নেতাকর্মীরা লড়াই করেছে, সেই সংগঠনের কর্মী হওয়ার কারণে কাউকে যদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, সেই এলাকাকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
ছাত্রলীগ সভাপতি আরও বলেন, রাব্বির সিট বাতিল হয়েছে একমাত্র ছাত্রলীগ করার কারণে। বুয়েটের ভিসিকে আমরা বলব, টাঙ্গুয়ার হাওরে জঙ্গিদের মিটিং করার জন্য, ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিটিং করার জন্য, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছিল, তাদের নামে মামলাও হয়েছিল। সেই রাষ্ট্রবিরোধী আসামিরা কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বহাল তবিয়তে ক্লাস করছে, পরীক্ষা দিচ্ছে। আর তারা এখন ঠিক করছে, কারা ক্লাস করবে, পরীক্ষা দেবে বা দিবে না। এটা আমরা মানতে পারি না।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর ছাত্রলীগের নেতারাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বিশাল বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে বুয়েট উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।