জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৯৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ বাবাকে পুনঃরায় বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়েছেন তাঁর সন্তান চট্টগ্রাম জেলা জর্জকোর্টের আইনজীবী কাজী মুফিজুর রহমান। ৯৫ বছর বয়সে বিয়ে করে ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন বাঁশখালী উপজেলার বাহার ছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামের কাজী বাড়ীর আলহাজ্ব কাজী সিরাজ আহমদ। কনে একই উপজেলার পৌরসভার মিয়ার বাজার এলাকার মেহরাজ খাতুন। তার বয়স ৫২ বছর।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারী) রাত্রে শহরে তাদের বাসায় খতিবের হাট জামে মসজিদে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়।
কাজী সিরাজ আহমদ ১৯৮৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মক্কাশরিফের পবিত্র বাইতুল্লাহর একজন চাকরিজীবী ছিলেন। তিনি প্রথম বিয়ে করেছেন ১৯৫৮ সালে। তবে সে স্ত্রী মারা গেছেন ২০১৩ সালের প্রথম দিকে। ওই সংসারে এক ছেলে চার মেয়েসন্তান রয়েছে।
বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর একমাত্র ছেলে চট্টগ্রাম জর্জকোর্টের আইনজীবী কাজী মুফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, আমার আম্মা অসুস্থজনিত কারণে মারা যায় ২০১৩ সালের প্রথম দিকে। পরে বাবাকে বিয়ে করতে বলেছিলাম বাবা তখন রাজি হয়নি। পরবর্তীতে লোকজন থেকে শুনেছি আমার বাবা বিয়ে করতে চাচ্ছেন এবং বাবা যখন রাজি হল বিগত পাঁচ বছর থেকে বাবার জন্য আমরা মেয়ের খোঁজ নিচ্ছি। এমনকি আমার ১২ বছর ওকালতিতে যত মহিলা ক্লায়েন্ট এসেছে সবাইকে বাবার জন্য বউয়ের কথা বলেছি।
সর্বশেষ উপজেলার জলদি মিয়া বাজারের পূর্ব পাশে মেহরাজ খাতুন নামে একজন মহিলাকে আমাদের মা করে নিলাম। বাবাকে নতুন সংসারে আবদ্ধ করাতে আমাদের বোনদের একটু আপত্তি থাকলেও আমি ছেলে হিসেবে দীর্ঘ সময় পর আমরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাবাকে বিয়ে করিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বাবাকে বিয়ে করার কারণ হচ্ছে- আমি মনে করি আমার বাবার খুব শক্ত শক্তি সামর্থ্য আছে। আমি এবং আমার স্ত্রী যখন কোর্টে চলে আসি আমার বাবা বাসায় একাকীত্বত অনুভব করে। আমি মনে করলাম বাবাকে বিয়ে করালে বাবার মন-মানসিকতা পুরোপুরি ভাল থাকলে আরো বেশি হায়াৎ পাবে। আমাকে এখন প্রতিদিন সকালে বের হতে তিনটি চুমু দেয় আমি তিনটা চুমু দেই। রাত্রে বাসায় ফিরলে আমাকে আবার তিনটা চুমু দেয় আমি তিনটা চুমু দেই। আমার কথা হল আমি আমার বাবার একমাত্র সন্তান। আমার বাবার এখন থেকে আর একাকিত্ব অনুভব করবে না। আমার মায়ের (নতুন) সাথে আমার ওয়াদা ছিল উনাকে মায়ের মর্যাদা দিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত দেখ ভাল করব। ওনার ঐকান্তিক ইচ্ছা ওনাকে আল্লাহর ঘর বাইতুল্লাহ দেখাবো। মাকে আনার সময় উপযুক্ত কাপড়, স্বর্ণালঙ্কার দিয়েছি। ওনার আগের বিবাহ কাবিন ছিল ১০ হাজার টাকা।, বর্তমান আমি নির্ধারণ করেছি এক লক্ষ এক টাকা।
বিষয়টি নিয়ে কেউ যেন নেতিবাচক মন্তব্য না করেন, সেজন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আইনজীবী ছেলে কাজী মফিজুর রহমান। এদেশের অধিকাংশ বাবারা বয়স হয়ে যাওয়ার পর তার সন্তানের উপর নির্ভর করে। নিজের হাতে কিছু না থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক কিছু ছেলেদের থেকে চাওয়া যায়না। অথবা সন্তানেরা বুঝলেও সামাজিক কুচক্র মহলের কারণে বাবাদের দ্বিতীয় বিয়ে করানো থেকে দূরে থাকে। যদিও অধিকাংশ সন্তানেরা মনে করে দ্বিতীয় বিয়ে অসম্মানের। মূলত তাদের ভুল ধারণা ভাঙতে মায়ের অভাব পূরণের জন্য ৯৫ বছর বয়সে বাবাকে বিয়ে করান এডভোকেট কাজি মফিজুর রহমান। তার এমন সুন্দর উদ্যোগের জন্য অনেকেই সাধুবাদ জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।