আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ায় সেনাবিদ্রোহের ব্যর্থ চেষ্টার পর বেলারুশে গিয়ে আশ্রয় নিলেন ওয়াগনার প্রধান প্রিগোঝিন। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো নিজেই গণমাধ্যমকে এখবর দিয়েছেন।
গত সপ্তাহের শেষে রাশিয়ায় সেনা-বিদ্রোহের চেষ্টা করেছিলেন ওয়াগনার প্রধান। তার আগে অবশ্য রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল ওয়াগনার। তারা ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখলও করেছিল। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে তারা ক্রমাগত রাশিয়ার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলছিল। গত সপ্তাহান্তে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মস্কো অভিযানের চেষ্টা করেছিল। তবে শেষপর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হস্তক্ষেপে তারা সে কাজে বিরত হয়।
বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর প্রিগোঝিনের খবরাখবর মিলছিল না। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা ছিল, তিনি রাশিয়াতেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে মঙ্গলবার বিকালে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট স্বয়ং জানান, ওয়াগনার প্রধান বেলারুশে পৌঁছেছেন। একটি বিজনেস জেটে রসতভ-অন-ডন থেকে মিনস্কে পৌঁছেছেন ওয়াগনার প্রধান। ফ্লাইটরাডার উড়ানের কথা নিশ্চিত করলেও তার ভিতর প্রিগোঝিন ছিলেন কিনা, তা জানাতে পারেনি।
লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় ওয়াগনার সেনা বিদ্রোহ মাঝপথে স্থগিত করেছে। এরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নিজেই জানিয়েছিলেন, বিদ্রোহী ওয়াগনার সেনারা চাইলে বেলারুশে গিয়ে থাকতে পারেন।
দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে লুকাশেঙ্কো জানিয়েছিলেন, ওয়াগনার সেনা এবং তাদের সেনাপ্রধান যদি বেলারুশে যান, তাহলে তা বেলারুশের সামরিক শক্তি আরো বাড়াবে। ফলে কার্যত ওয়াগনার সেনাপ্রধানকে আমন্ত্রণই জানিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট দুদা তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তার বক্তব্য, বেলারুশে ওয়াগনার সেনার উপস্থিতি পোল্যান্ডের জন্য যথেষ্ট চিন্তার কারণ। ন্যাটোর দ্রুত এর বিরুদ্ধে কড়া জবাব দেওয়া উচিত। বস্তুত, পোল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে বেলারুশ। সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে তীব্র বিরোধও আছে। এই পরিস্থিতিতে বেলারুশ ওয়াগনার সেনাকে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে বলে দুদার আশঙ্কা। লিথুয়ানিয়াও তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
তবে ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, আপাতত বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখা ছাড়া আর কিছু করণীয় নেই। এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। তবে একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বেলারুশ এবং রাশিয়াকে একটি বার্তা আগেই দিয়ে রেখেছেন তিনি, ন্যাটোর অন্তর্গত দেশগুলির সীমান্ত রক্ষা করার জন্য ন্যাটো সবরকম ব্যবস্থা নিতে পারে। এক ইঞ্চি জমিও তারা ছাড়বে না।
এদিকে বেলারুশের গণতন্ত্রপন্থি বিরোধীপক্ষ ওয়াগনার সেনার উপস্থিতি নিয়ে তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য, নিজের দেশের বিরোধীদের বিরুদ্ধেও এই সেনাকে ব্যবহার করতে পারতে পারেন লুকাশেঙ্কো। (রয়টার্স, এপি, এএফপি)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।