ব্রাজিলের জনসংখ্যা, ভূখণ্ড, এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মোট জনসংখ্যা, ভূখণ্ড, এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় অর্ধেক। ফলে, দেশটি ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চলে একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যে ব্রাজিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। ব্রাজিল ইতোমধ্যে পঞ্চাশটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। হাইতি এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ব্রাজিলের সামরিক বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দেশটির বাণিজ্যের প্রধান অংশীদার, এবং একইসাথে, দেশটি রাশিয়ার সাথে রাজনৈতিক ও সামরিক খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিস্তারে চেষ্টা করছে।
ব্রাজিল ইরানের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে গুরুত্বারোপ করেছে, এবং দেশটি ইরানের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রাজিলের কৃষিজাত পণ্যের অন্যতম গন্তব্যস্থল।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে ব্রাজিল রাশিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার এবং ২০২০ সালে রাশিয়া দেশটিতে প্রায় ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। রাশিয়া দেশটির তেল ও গ্যাস খাত, অবকাঠামো, এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্পে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
বর্তমানে চীন ব্রাজিলের বাণিজ্যের অন্যতম অংশীদার। ২০২০ সালে ব্রাজিল প্রায় ৬৭.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য চীনে রপ্তানি করেছে এবং দেশটির প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে সয়াবিন, লৌহ আকরিক, ও অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম উল্লেখযোগ্য। ২০০৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চীন বিভিন্ন খাতে ব্রাজিলে প্রায় ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বৈশ্বিক মহামারির শুরুর দিকে ব্রাজিল কোভিড–১৯ মোকাবেলায় চীনের তৈরি ভ্যাক্সিনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করেছে।
২০১৮ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জাইর বলসোনারো জয়ী হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল কূটনৈতিক সম্পর্কের বেশ অগ্রগতি হয়। এমনকি, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ব্রাজিলকে ‘উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট’ (ন্যাটো) এর বাইরে ‘অন্যতম প্রধান মিত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
দেশটি আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, এবং প্যারাগুয়েকে সাথে আঞ্চলিক বাজার ব্যবস্থায় মুক্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে। ব্রাজিল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
দেশটি পশ্চিম গোলার্ধের সর্ববৃহৎ সহযোগিতা সংস্থা অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস) এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। এই সংস্থাটি অঞ্চলটির দারিদ্র্য বিমোচন, শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদার করা, এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিতে কাজ করছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ব্রাজিল বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে নিজের প্রভাব রাখতে শুরু করে। লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে একমাত্র দেশ হিসেবে ব্রাজিল সেই যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।