জুমবাংলা ডেস্ক : এবার ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রির অভিযোগ উঠেছে সাউথইস্ট ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে।ডেইজি নিলুফার শারমিন নামের ওই কর্মকর্তা ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকটিতে হেড অব হিউম্যান রিসোর্সের (মানবসম্পদ বিভাগ) প্রধান হিসেবে যোগ দেন।
সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন নামের মানবাধিকার সংস্থার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ আসার পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ২০০৭ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ইন্টার্নশিপ করার মাধ্যমে চাকরিজীবন শুরু হয় ডেইজির।
২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংকে এসএমই শাখায় সহযোগী ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করেন তিনি। এরপর যোগ দেন ওয়ান ব্যাংকে। সাউথইস্টে যোগদানের আগে সেখানে ট্রেইনিং শাখায় চাকরি করতেন ডেইজি। সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে সবশেষ চাকরি করলেও এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে দুই ধাপ পদোন্নতি নিয়ে সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসএভিপি) হিসেবে সরাসরি আসেন সাউথইস্টে। তার এ যোগদানে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত সাউথইস্টের সাবেক উপদেষ্টা জাকির আহমেদ খানের ‘আশীর্বাদ ছিল’ বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
নিজের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে মানবসম্পদ বিভাগে কাজের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকার পরেও বর্তমানে ব্যাংকটির শীর্ষ পদের এক কর্মকর্তার সঙ্গে ‘বিশেষ সখ্যতার’ কারণে বিভাগ প্রধানের পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ডেইজির বিরুদ্ধে। সবকিছুর পরেও তার পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ব্যাংকপাড়ায়।
ডেইজি নিজের প্রোফাইলে উল্লেখ করেন ডাইভারসিটি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন প্রোগ্রাম বিষয়ে তিনি ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করলেও তার দাবি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধীনে তিনি এই পিএইচডি করেছেন। তবে স্বপক্ষে কোনো যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেননি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করার পর ডেইজি সামনাসামনি কথা বলবেন বলে জানান।
এদিকে অনলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডেইজির পিএইচডির বিষয় অনুসন্ধান করার পর একই বিষয়ে অন্য একজনের গবেষণাকর্মের সঙ্গে প্রায় ৮৫ ভাগ হুবহু মিলে যায়, যা তার চৌর্যবৃত্তির মনোভাবকে প্রমাণ করে। এ প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহের মধ্যে ডেইজির ‘ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রিকে’ চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর শামস।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তদন্তের মাধ্যমে তার জালিয়াতি প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো প্রকার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া ডাবল প্রমোশন দিয়ে একটি ব্যাংকের হেড অব এইচআর (মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান) করা হাস্যকর এবং গুরুতর অনিয়ম বলে মনে করি। বিষয়টি ইতোমধ্যে কয়েকটি গণমাধ্যমে দেখেছি এবং লিখিত অভিযোগ পেলে সাউথইস্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা তলব করা হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডেইজি নিলুফার শারমিনকে একাধিকবার কল এবং ক্ষুদে বার্তা দিয়েও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।