উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের রিচার্ড থ্রি বইয়ে দুষ্ট বাদশাহকে বলা হয়েছে ‘বিষাক্ত ব্যাঙ’। তাদের বিশ্বাস ছিল, এসব ব্যাঙের মাথার ভেতরে মূল্যবান পাথর থাকে, যা টোডস্টোন নামে পরিচিত। অ্যালকেমিস্ট বা অপরসায়নবিদেরা জাদুর ক্ষমতা পাওয়ার জন্য এবং বিষ নিষ্ক্রিয় করতে এসব পাথর খুঁজত। আসলে টোডস্টোন বলতে কিছু ছিল না। বরং তখনকার দিনে মানুষ Lepidotes sp. নামে একটি বিলুপ্ত মাছের জীবাশ্মের দাঁতকে মনে করত টোডস্টোন।
প্রাচীন চীনে সবুজ ব্যাঙকে মনে করা হতো দেবী। তাদের মতে, এই ব্যাঙ শুধু খাওয়া, মদ্যপান এবং অভিনয় পছন্দ করত। চীনে বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যাঙের খোদাই করা ছবি ব্যবহৃত হতো। যেমন বধিরতা দূর করতে। তারা ব্যাঙকে ‘হ্যাভেনলি চিকেন’ নামে আখ্যায়িত করেছিল। ভাবত, ব্যাঙ বৃষ্টির মাধ্যমে স্বর্গ থেকে ভূপতিত হয় এবং ধন-সম্পদসহ কল্যাণ নিয়ে আসে। চীনের কিছু এলাকায় ব্যাঙের মন্দিরও নির্মিত হয়েছিল।
এ সব মন্দিরে পূজা করে মানুষ দৈনন্দিন কাজকর্ম শুরু করত। চীনে বিছা (Scorpion), সেন্টিপিড বা শতপদী (Centipede), মাকড়সা (Spider) এবং সাপের (Snake) পাশাপাশি ব্যাঙকেও বিষাক্ত প্রাণী বলে মনে করত। চীনে তিন পা-ওয়ালা টোড বা ব্যাঙাচি ‘মানি টোড’ বা ‘মানি ফ্রগ’ বা ‘চান’ নামে পরিচিত। চাইনিজ মিথোলজি অনুসারে, লিউ হাই নামে এক ব্যক্তির তিন পা-ওয়ালা টোড ছিল।
তিনি বিষাক্ত সরীসৃপ থেকে একটি জলাশয় রক্ষা করতে এসব টোড ব্যবহার করেছিলেন। জলাশয়ের পাশে একটা সোনার চেইনের সাহায্যে টোড রেখে দেন। তারপর স্বর্ণের লোভে সরীসৃপটি ওপরে উঠে আসে এবং লিউ হাই সেটি হত্যা করেন। এভাবে লিউ হাই প্রতিষ্ঠা করেন ‘লোভের শাস্তি মৃত্যু’।
জাপানে প্রতি বছর ৭ জুলাই জাওডো মন্দিরে ব্যাঙ উৎসব পালন করা হয়। জাপানিজ মিথোলজি অনুসারে, এক যুবক একজন বৌদ্ধ পুরোহিতকে খারাপ কথা বলায় তাকে ব্যাঙে রুপান্তর করা হয়েছিল। ব্যাঙকে বৃষ্টি এবং বর্ষাকালের পূর্বাভাস হিসেবে জাপান ও ভিয়েতনামে দেখা হয়। এ ছাড়া জাপানের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙকে অধ্যবসায় ও শক্তির উৎস বলে মনে করা হয়।
আরব জ্যোতিষীরা দুটি তারকার নামকরণ করেছেন ব্যাঙের নামে। একটি ‘আল দিফদি আল আউয়াল’ (Al Difdi al Awwal) বা দ্য ফার্স্ট ফ্রগ এবং অপরটি ‘আল দিফদি আস সানি’ (Al Difdi al Thani) বা দ্য সেকেন্ড ফ্রগ। আধুনিক নক্ষত্রশাস্ত্র অনুসারে এদের নামকরণ করা হয়েছে যথাক্রমে ‘Alpha Piscis Austrini’ বা ‘Famalhaut’ এবং ‘Rana Secunda’। Famalhaut সবচেয়ে উজ্জ্বল বিশটি নক্ষত্রের একটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।