জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউপির পোড়াবাড়ি বাজারে খিরু নদীর উপর প্রায় ৪০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল স্টিলের বেইলি ব্রিজ। ১০-১২ বছর যেতে না যেতেই ব্রিজের অনেকগুলো পাটাতনে মরিচা ধরে ভাঙতে শুরু করে।
বয়সের ভারে এখন ব্রিজটির বেহাল দশা থাকলেও নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ না নিয়ে বরং করা হয় দায়সারা সংস্কার। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা, আহত হন অনেকে। স্থানীয়দের এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
ভারি যান চলাচল নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বুধবার বিকেলে ব্রিজটি দিয়ে খৈলবোঝাই একটি ট্রাক পারাপারের করতে গেলে পাটাতন ভেঙে ব্রিজের একপ্রান্তে আটকে যায়। ঘটনার পরপরই বন্ধ হয়ে পড়ে দুই উপজেলার মানুষ ও সব ধরনের যান চলাচল। ফলে সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তি।
জানা গেছে, ত্রিশাল সদর থেকে মঠবাড়ী ইউপির পোড়াবাড়ি বাজার হয়ে উপজেলার মোক্ষপুর ইউপিসহ ফুলবাড়িয়া উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলসহ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় যাতায়াতে গুরুত্ব বহন করে এ বেইলি ব্রিজটি।
১৯৮২ সালে ২৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ এ বেইলি ব্রিজটি খিরু নদীর উপর নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের এক যুগ না পেরুতেই ব্রিজের অনেকগুলো পাটাতনে মরিচা পড়ে ভাঙতে শুরু করে। ভারি যানবাহন চলাচলের সময় পাটাতন ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েক বার। আহতের সংখ্যাও অনেক। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে হয় দু’পারের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের।
এরপর উপজেলা প্রশাসন ওই ব্রিজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাইনবোর্ড ও লাল নিশানা টানিয়ে দিলেও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন চলাচল করছে ভারি যানবাহন। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে একটি খৈলবোঝাই ট্রাক ওই ব্রিজ পারাপারের সময় পাটাতন ভেঙে পেছনের চাকা দেবে একপ্রান্তে ট্রাকটি আটকে যায়।
এরপর থেকে সব ধরনের যানসহ বন্ধ হয়ে গেছে মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচলের পথ। এতে দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছে ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া উপজেলার দুই পাড়ের মানুষ। মঠবাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি ইউপিতে সহস্রাধিক মাছের ফিসারি থাকায় প্রতিদিন শতশত মাছ ও খাদ্য সামগ্রী বহন করা ট্রাক চলাচল করে ওই ব্রিজ দিয়ে। এছাড়া অন্য যানবাহন তো আছেই। পাটাতন ভেঙে ট্রাক আটকে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে দু-পাড়ের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয় এই ব্রিজ দিয়ে। এখন ব্রিজটি ছাড়া দু’পাড়ের কয়েক হাজার মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে যাবে। বছর বছর সংস্কারের পরিবর্তে দ্রুত নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান স্থানীয়রা।
এদিকে দুর্ঘটনার ঘটনার পরপরই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার, ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, এরমধ্যে ওই ব্রিজটি মেরামতের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি আগামী মাসের শুরুর দিকে কাজ শুরু করা যাবে।
ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে মেরামতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তবে সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।