হকিং রেডিয়েশনের মাধ্যমে ব্ল্যাকহোলদের সংকুচিত হতে প্রয়োজন সুদীর্ঘ সময়। যে ব্ল্যাকহোলের আকার যত বড়, তার মৃত্যুঘণ্টা বাজতে সময় লাগবে তত বেশি। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত মহাজাগতিক বস্তুদের গ্রাস করা অব্যাহত থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বহাল তবিয়তেই টিকে থাকতে পারবে এগুলো। যখন মহাবিশ্বে গ্রাস করার মতো আর কোনো বস্তু অবশিষ্ট থাকবে না, তখন থেকেই বাজতে শুরু করবে এদের মৃত্যুঘণ্টা।
হকিং রেডিয়েশনের মাধ্যমে এরা সংকুচিত হতে শুরু করবে। এভাবে আমাদের সূর্যের সমান ভরের ব্ল্যাকহোলের অন্তিম সময় উপস্থিত হতে প্রয়োজন পড়বে আনুমানিক ১০৬৭ (১-এর পর ৬৭টা শূন্য!) বছর। অন্যদিকে, সুপারম্যাসিভ বা অতিভারী কৃষ্ণগহ্বরদের ক্ষেত্রে এই সময়কাল হতে পারে ১০১০০ (১-এর পর ১০০টা শূন্য) বছরেরও বেশি!
সংকুচিত হওয়ার একদম শেষ পর্যায়ে এসে সব ব্ল্যাকহোলই বিস্ফোরিত হবে। অবমুক্ত হবে বিপুল পরিমাণ আলো ও শক্তি। খুব ছোট জায়গায় আমরা যদি একসঙ্গে এক মিলিয়ন ফিউশন বোমা বিস্ফোরণ ঘটাই, তাহলে এর সমপরিমাণ শক্তি অবমুক্ত হবে। পৃথিবীর বিচারে একে প্রলয়ংকরী বিস্ফোরণ বলা যায়। তবে মহাজাগতিক স্কেলে এটা খুব একটা শক্তিশালী নয়। এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারনোভায় এর চেয়েও ২২ ট্রিলিয়ন গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরণের দেখা মিলেছে।
যাহোক, ছোট-বড় সব ব্ল্যাকহোলই শেষ পর্যন্ত একইভাবে বিস্ফোরিত হবে। পার্থক্য কেবল, কত সময় লাগবে, তাতে। বড় ব্ল্যাকহোলগুলো সংকোচনের মাধ্যমে বিস্ফোরণের পর্যায়ে আসতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় নেবে। ছোটদের বেলায় এই সময়কাল অপেক্ষাকৃত কম। তবে যত যাই হোক, মৃত্যুর হাত থেকে নিস্তার পাবে না কেউই।
তবু ‘কিন্তু’ রয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কিন্তুটি হলো, তাত্ত্বিকভাবে এসবই হওয়ার কথা। তবে হকিং বিকিরণের নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি এখনো। ল্যাবে সিমুলেশন করে দেখা হয়েছে, এমনটিই হয়। বাস্তবেও হয়তো এর প্রমাণ মিলবে শিগগিরই। অবশ্য এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, কৃষ্ণগহ্বরেরও মৃত্যু হয়। ধীরে ধীরে ব্ল্যাকহোল মিলিয়ে যায় মহাকাশের নিঃসীম অন্ধকারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।