জুমবাংলা ডেস্ক : গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দামে ধস নেমেছে। পাইকারিতে যে দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে তাতে কেজিতে খামারিদের লোকসান হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। উৎপাদন খরচ তুলতে না পারায় ব্যবসা গোটাচ্ছেন রাজশাহীর খামারিরা।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর এলাকার বাসিন্দা মুস্তাকিম বিল্লাহ। দীর্ঘদিন ব্রয়লার মুরগি পালন করছেন। কিন্তু বর্তমানে তার খামার ফাঁকা। নতুনভাবে বাচ্চা তোলেননি। গত এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগি পাইকারিতে ১১৫ টাকা হয়েছে। তবে, রাজশাহীর বাজারে বর্তমানে দামে ধস নেমেছে। আসন্ন কোরবানি উপলক্ষ্যে গরুর মাংসের সরবরাহ বেড়ে গেলে ব্রয়লার মুরগির মাংসের চাহিদা কমে যাবে। এমন ধারা অব্যাহত প্রতিবছরই। ফলে একদিকে ঈদ; অন্যদিকে অস্বাভাবিক দাম কমার কারণে খামার বন্ধ করছেন তারা।
খামার বন্ধের কারণ জানতে চাইলে মুস্তাকিম বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খামার পর্যায়ে ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। ১ হাজার বয়লার বাচ্চা একদিন বয়স থেকে ৩০ দিন অর্থ্যাৎ ৮’শ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজন করতে প্রায় ৬০ বস্তা খাবার খায়।
প্রতিবস্তা খাবার বর্তমানে ৩১৬০ টাকা দাম লেগেছে। প্রতিকেজি মুরগির উৎপাদন খরচ ১১০ থেকে ১১৫ টাকার উপরে। আর বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। হিসেব করলে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা লোকসান। বর্তমান বাজারে মুরগি বিক্রি করলে ১ হাজার ব্রয়লার মুরগির খরচ ও আনুষাঙ্গিক মিলিয়ে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে। ব্রয়লারের দাম ঈদের আগে বাড়বে বলে মনে হয়না।
আরেক খামারি জাহিদ বলেন, খাদ্যের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে লাভ করার কোন উপায় নাই। খামার আপাতত বন্ধ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির কেজিতে নাই হয়ে গেছে প্রায় ২৫ টাকা। কারেন্ট বিল, লেবার খরচ, ভ্যাকসিনের দাম সব মিলিয়ে মুরগি পালন করে এক টাকা লাভ নাই। ডিলাররা বর্তমানে ফিড ও বাচ্চা বাঁকিতে দিতে চাইলেও অনেক খামারি নিচ্ছেন না। মুরগি তুলে গলার কাঁটা করে কোন লাভ নাই।
রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, রাজশাহীতে প্রায় ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ খামার বন্ধ। অনেক খামারি পুুঁজি সংকটে বাচ্চা না কিনে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। ঈদের পরে ব্রয়লারসহ বিভিন্ন মুরগির দাম বাড়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু এখন যে দামে ধস নেমেছে এসময় খামারিরা বাঁচবে কিভাবে এটাই বড় প্রশ্ন। ঈদের মধ্যে বেশকিছু খামার চিরস্থায়ী বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ব্রয়লারের বাচ্চা ৫ থেকে ৭ টাকা দাম থেকে সপ্তাহের শেষে ১০ টাকার উপরে উঠে গেছে। খাদ্যের দাম গত মাসেও ২০০ টাকা বেড়েছে। খামারিরা এ পরিস্থিতিতে কি করবে ভেবে পাচ্ছেন না।
রাজশাহী সাহেববাজরের পোল্ট্রি মুরগি বিক্রেতা “মুরগির দোকান” প্রতিষ্টানের মিঠু হোসেনের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, বাজারে ঈদের পর মুরগির কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে যাবে এরকমই মনে হচ্ছে। এখন পাইকারি ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কিনতে হচ্ছে। আর আমরা কিনি এজেন্টের কাছে থেকে। তারা খামার থেকে আরো ১০ টাকা টাকা কম দামে কিনে। খুচরা আমরা ৫ টাকা লাভে বিক্রি করি। আমরা যাদের থেকে কিনি তারা কিছুটা লাভ করে। আর খামারিরা প্রতিকেজি দাম পাচ্ছে মাত্র ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি।
বর্তমান খুচরা বাজারদর জানতে চাইলে তিনি জানান, ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা, সোনালী ২৩০ টাকা, সাদা কক ২১০ টাকা, দেশী ৪৩০ টাকা এবং লাল কক ২৩০ টাকা দরে।
সূত্র: এগ্রিকেয়ার২৪.কম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।