বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : সাম্প্রতিক সময়ে সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি চাকরির বিজ্ঞাপনগুলোতে একটি শব্দ ঘন ঘন উঠে আসছে—ভাইব কোডিং। এটি এখন শুধু বাড়তি দক্ষতা নয়, অনেক প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য অপরিহার্য শর্ত হয়ে উঠেছে। ভিসা, রেডিট, ডোরড্যাশ ও স্নাইকসহ অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এখন এমন প্রকৌশলী খুঁজছে, যাঁরা এআই কোডিং টুলে পারদর্শী।
কী এই ভাইব কোডিং?
ভাইব কোডিং বলতে বোঝানো হয়—এআই ব্যবহার করে দ্রুত ও কার্যকর কোড তৈরি করার দক্ষতা। কার্সর (Cursor), বোল্ট (BOLT) বা অন্যান্য জেনারেটিভ এআই কোডিং টুল ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে কাজ করা হয়। ইয়কমবিনেটর-সমর্থিত ডোমু টেকনোলজির মতে, একজন ইঞ্জিনিয়ারের কোডের অন্তত অর্ধেক এআই দিয়ে লেখা হওয়া উচিত।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ভাইব কোডিং ব্যবহার করে ইঞ্জিনিয়াররা আগের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ দ্রুত কোড লিখতে পারছেন। মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি ইনটুইটের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা অ্যালেক্স বালাজ বলছেন, ‘একজন দক্ষ প্রকৌশলী যখন এআই কোডিং টুল ব্যবহার করেন, তখন তার উৎপাদনশীলতা অনেক বেড়ে যায়।’
চাকরিতে ভাইব কোডিং এখন ‘অপরিহার্য’
ভিসার অস্টিন অফিসে সম্প্রতি তিনটি জেনারেটিভ এআই ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, যেখানে ভাইব কোডিং জানা অপরিহার্য বলা হয়েছে। রেডিট এমন ইঞ্জিনিয়ার খুঁজছে, যিনি কার্সর ও বোল্টের মতো এআই কোডিং টুলের সঙ্গে একীভূত হয়ে কাজ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে এই ইঞ্জিনিয়ার ভাইব কোডিং কমিউনিটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে মতামত সংগ্রহ করবেন এবং এর ব্যবহার বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন।
উডাসিটি, টুবি, এমনকি আমাজনও ভাইব কোডিং টুলের কার্যকারিতা নিয়ে ভাবছে। তবে এখনো গুগল, মাইক্রোসফট বা অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরির বিজ্ঞাপনে সরাসরি ভাইব কোডিংয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
ভাইব কোডিং নিয়ে উচ্ছ্বাস থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো এটি অভিজ্ঞ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের বিকল্প নয়। সাবেক ওয়েমো প্রকৌশলী মোহাম্মদ সানাতকার বলছেন, ‘এআই টুলগুলো মূলত সহজ কাজের জন্য উপযুক্ত। জটিল, প্রোডাকশন-রেডি সিস্টেমে এখনো মানুষের দক্ষতার বিকল্প নেই।’
এ কথা ঠিক, ভাইব কোডিং নতুন যুগের এক বাস্তবতা। যাঁরা প্রযুক্তি খাতে চাকরি খুঁজছেন, তাঁদের জন্য ভাইব কোডিং জানা এখন শুধু বাড়তি যোগ্যতা নয়, অনেক প্রতিষ্ঠানে এটি চাকরির পূর্বশর্ত।
ভাইব কোডিং এখন প্রযুক্তি খাতে চাকরির নতুন বাস্তবতা। এটি শুধু একটি সুবিধাজনক টুল নয়, বরং অনেক প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিতে এটি একটি আবশ্যিক দক্ষতা। ফলে যারা প্রযুক্তি পেশায় প্রবেশ করতে চায়, তাদের এখন থেকেই ভাইব কোডিং শিখে প্রস্তুত হওয়া উচিত।
FAQs: ভাইব কোডিং
১. ভাইব কোডিং কী?
ভাইব কোডিং হলো এআই কোডিং টুল ব্যবহার করে দ্রুত ও কার্যকরভাবে কোড লেখার প্রক্রিয়া, বিশেষত কার্সর বা বোল্টের মতো টুল ব্যবহারে দক্ষতা।
২. কেন ভাইব কোডিং এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে?
ভাইব কোডিংয়ের মাধ্যমে প্রকৌশলীরা আগের চেয়ে ৩০–৪০% দ্রুত কোড লিখতে পারছেন, যা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে।
৩. কোন কোন কোম্পানি ভাইব কোডিংয়ের দক্ষতা চাচ্ছে?
ভিসা, রেডিট, ডোরড্যাশ, স্নাইক, উডাসিটি ও টুবির মতো প্রতিষ্ঠান এই দক্ষতাকে চাকরির পূর্বশর্ত হিসেবে দেখছে।
৪. কি ভাইব কোডিং সব ধরনের প্রকৌশলীর জন্য প্রযোজ্য?
সব ক্ষেত্রে নয়। সহজ কাজের জন্য উপযোগী হলেও জটিল সফটওয়্যার প্রকৌশলে এখনো মানুষের অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. ভাইব কোডিং শিখতে কী প্রয়োজন?
কার্সর, বোল্টের মতো এআই কোডিং টুল নিয়ে কাজ করার অভ্যাস, পাশাপাশি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মৌলিক জ্ঞান প্রয়োজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।