জুমবাংলা ডেস্ক : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গওহরডাঙ্গা মাদরাসার বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে গণজমায়েত এড়াতে দেয়া এক ঘোষণা নিয়ে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিতর্ক’ সৃষ্টি করছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
‘মুজিবের ভিটায় তালেবানি ফতোয়া, বাজারে যেতে পারবেন না মহিলারা’- এমন শিরোনামে গত কয়েক দিন ধরে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ভারতীয় মিডিয়াগুলো। টুঙ্গিপাড়ার গওহরডাঙ্গামাদরাসার বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মেলায় স্বেচ্ছাসেবীদের শৃঙ্খলারক্ষা ও গণজমায়েত এড়াতে দেয়া এক ঘোষণা নিয়ে এ বিতর্ক তুলছেন ভারতীয় সাংবাদিকেরা।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যমে এমন অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি উসামা আমিন।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত পরামর্শে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত হল পুরুষ প্রাঙ্গণের অস্থায়ী দোকানপাটে শুধুমাত্র মাহফিলের তিন দিনের জন্য নারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে, তাদের প্রবেশ নিষেধ থাকে। এই নিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে মাহফিলের স্বেচ্ছাসেবকরা অস্থায়ী দোকানপাটে ঘুরে ঘুরে মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। যার একটি খণ্ডিত ভিডিও চিত্র দিয়ে ভারতীয় কিছু নিউজ চ্যানেল ও পেশাদার কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের ব্যক্তি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে অপপ্রচার চালায়।
মুফতি উসামা আমিন বলেন, অথচ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এটা কোন বাজার নয় বরং অস্থায়ী কিছু দোকানপাট। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্যমান আমাদের ভিডিও চিত্রে স্পষ্টভাবে মাইকে বলা হচ্ছে এই নিয়ম শুধুমাত্র ২৭, ২৮ ও ২৯ নভেম্বর তিন দিনের জন্য। যা এখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে। আমাদের ভিডিওটি এবং তাদের অপপ্রচারের অংশটুকু যদি কেউ মিলিয়ে দেখেন তাহলে যে কারোর কাছে বিষয়টি নিন্দনীয় ও হাস্যকর মনে হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি এই অপপ্রচার হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা উসকে দেওয়ার জন্য একটি পাঁয়তারা এবং ভারত বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক বিনষ্ট করার অপকৌশল। আমাদের সামনে স্পষ্ট যে, তাদের এই মিথ্যা অপপ্রচার আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অসৎ পরিকল্পনার অংশ ছাড়া আর কিছুই না।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে প্রতিবেশীদের প্রতি আরও দায়িত্ব-সচেতন হতে হবে। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সব আচার-আচরণে সৌহার্দ্যের পরিচয় দিতে হবে। সভ্যতা শুধু মুখে নয়, আচরণেও প্রকাশ করতে হবে।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৭ নভেম্বর গওহরডাঙ্গা মাদরাসায় তিন দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর এ মাহফিলে দুই লাকের বেশি মানুষের সমাগম হয়। মাহফিলকে ঘিরে পাশে গড়ে উঠে খাবারসহ বিভিন্ন রকমের দোকান। সেখানে এক ধরনের মেলায় পরিণত হয়। মাহফিলের শৃঙ্খলারক্ষা ও গণজমায়েত এড়াতে এলাকার নারীদের দোকানে না আসার অনুরোধ করে মাইকিং করেন স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রতিবছর মাহফিলে না আসার জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা এভাবে অনুরোধ করে থাকেন।
সেই ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, দোকানদার ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে, মাহফিল চলাকালীন সময়ে কোনো দোকানদার মহিলাদের কাছে কিছু বিক্রি করবো না। যদি কোনো মহিলা আসে তাদের সুন্দর করে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিবেন। এছাড়াও নামাজ চলাকালীন সময়ে সকলে দোকানের পর্দা নামিয়ে দোকান বন্ধ রেখে নামাজে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।
মেলায় স্বেচ্ছাসেবীদের দেয়া সেই অনুরোধের ভিডিওকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ‘মুজিবের ভিটায় তালেবানি ফতোয়া, বাজারে যেতে পারবেন না মহিলারা’ শিরোনামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ভারতের মিডিয়াগুলো।
মিরপুরে বাজারের ব্যাগ থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার, পরিচয় শনাক্তে সহায়তা চায় পুলিশ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।