জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়ায় অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বন্ধ রয়েছে দুই দেশের ইমিগ্রেশন সেবা কার্যক্রম। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন দুইদেশে ভ্রমনরত যাত্রীরা। এদিকে উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় শুরু হয়েছে ত্রাণ তৎপরতা।
গ্রামবাসী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, গত মঙ্গলবার রাত থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভারি বর্ষণ শুরু হয়। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার হাওড়া নদী, কালন্দি খাল ও জার্জি খালের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আখাউড়া উপজেলার অন্তত ৩৬টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
অপরদিকে কসবা উপজেলার সালদা ও ছিনাই নদীর পানি বেড়ে উপজেলার বায়েক ও গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুই উপজেলার অন্তত ১২শ’ পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সরকারি ত্রাণ তৎপরতা পৌঁছায়নি বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।
আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, তার এলাকায় বেশ কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আশ্রম প্রকল্পের ঘরগুলোতে থাকা মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আখাউড়া স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, অমরপুর, রহিমপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগর, কর্নেল বাজার, মোগরা মনিয়ন্দসহ অন্তত ৩৬টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। পানির প্রবল তোড়ে ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার আখাউড়া আগরতলা সড়কের অস্থায়ী সেতু। পানিবন্দি মানুষ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদুল্লা হক বিজয় জানান,
বন্যাদুর্গত এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষার্থীরা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করছেন।
এদিকে দুপুরে পানিবন্দি দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল মো. হোসাইনসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়া উপজেলার ১২ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ মেট্রিকটন চাল এবং নগদ ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী মো. মনজুর রহমান জানান, হাওড়া নদীর আখাউড়া খলাপাড়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। পানি কমে গেলে বাঁধগুলো নির্মাণ করা হবে। তিনি জানান আজ দুপুর পর্যন্ত হাওড়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে আকস্মিক বন্যার কারণে ডুবে গেছে ধানের বীজতলা। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচারক সুশান্ত সাহা জানান, প্রায় ৩৪৪০ হোক্টর ফসলি জমি খতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরে সড়কটি পানি না কমা পর্যন্ত আমদানি রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে দুই দেশের ইমিগ্রেশন সেবা কার্যক্রম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।