আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে করোনয় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। মোট ১৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গিয়েছেন ৩ জন। সব চেয়ে বড় কথা, গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। খবর ডয়চে ভেলের।
তামিলনাড়ুতে ২০ বছর বয়সী একজন করোনায়আক্রান্ত। তিনি দিল্লি থেকে চেন্নাই গিয়েছিলেন। তবে তার আগে তিনি বিদেশে যাননি, দেশেই ছিলেন। এই ঘটনায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, ওই ব্যক্তি নিশ্চয়ই এমন কোনও লোকের সংস্পর্শে এসেছিলেন, যিনি বিদেশ থেকে করোনা নিয়ে ফিরেছেন এবং হাসপাতালে যাননি। চিকিৎসকদের ভয় সেখানেই। আতঙ্ক বা অজ্ঞানতার জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। লোকে ভয় পেয়ে প্রথমে হাসপাতালে যাচ্ছেন না। পরে যখন যাচ্ছেন বা যেতে বাধ্য হচ্ছেন, ততক্ষণে তিনি অনেকের সংস্পর্শে এসে গিয়েছেন। ফলে গোষ্ঠী সংক্রমণ হওয়ার প্রভূত সম্ভবনা রয়েছে। চেন্নাইয়ে বড় জমায়েত নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও সিএএ বিরোধী প্রতিবাদে শহরের রাস্তায় পাঁচ হাজার লোক নেমে পড়েছিলেন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এভাবেই করোনা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে। তার জন্য প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে। কিন্তু অজ্ঞানতার জন্য হোক বা বেপরোয়া মনোভাবের ফলে অথবা নিছক ভয় পেয়ে অনেকেই করনীয় কাজ করছেন না।
এরকমই দুটি ঘটনা ঘটেছে কলকাতা ও মুম্বইয়ে। কলকাতায় রাজ্যের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের এক আধিকারিকের ছেলে লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন। তাঁর বন্ধুরা তাঁকে জানান, যে পার্টিতে তিনি ছিলেন, সেখানে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ছেলেটির বাবা চিকিৎসক, মা আধিকারিক। তাঁকে প্রথমে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে বলা হয় আইডি হাসপাতালে যেতে। কিন্তু তিনি সেখানে না গিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান। পরের দিন তাঁর মা তাঁকে নিয়ে আইডি হাসপাতালে নামিয়ে দেন। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি করোনা আক্রান্ত। তাঁর মা আবার ছেলেকে নামিয়ে সোজা গিয়েছিলেন সচিবালয়ে। তিনি স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। মোট দশজনের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। আলাপন সহ দশজনকেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। আধিকারিক যেখানে বসেন, সেই একই তলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস। রীতিমতো বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যত বড় ভিআইপি বা তাঁর আত্মীয় হোন না কেন, সবাইকে নিয়ম মানতে হবে।
মুম্বইয়ে চারজন জার্মানি ফেরতকে নিয়ে আরেক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। চারজনকেই বাড়িতে কোয়ারান্টিন থাকতে বলা হয়েছিল। সেই মতো তাঁদের হাতে সিলও লাগিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা সেই নির্দেশ না মেনে সোজা সুরাতের ট্রেনে উঠে পড়েন। যাত্রী ও টিকিট পরীক্ষকরা তাঁদের হাতের সিল দেখে ফেলেন। ট্রেনের ভিতর ছড়িয়ে পড়ে প্রবল আতঙ্ক। পালঘর স্টেশনে তাঁদের নামিয়ে সোজা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
দিল্লিতে অস্ট্রেলিয়া ফেরত এক যাত্রী সফদরজঙ্গ হাসপাতালের সপ্তম তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি সিডনি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে দিল্লি ফেরত আসেন। বিমানবন্দরে তাঁকে দেখেই কর্মীদের সন্দেহ হয়। তাঁকে সফদরজঙ্গ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সাত তলা থেকে তিনি ঝাঁপ দিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।