আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শান্তির খোঁজে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতকে কেন্দ্র করে দু国ের মধ্যে বিরোধ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। লাইন অফ কন্ট্রোলের দুই দিকে নানা ঘটনার রেশ রয়ে গেছে, যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যকার অভিযোগ পালটা অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই অস্থির পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে যারা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাস করছেন।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে নতুন মাত্রা: ‘অপারেশন বানিয়ান মারসুস’
পাকিস্তান ‘অপারেশন বানিয়ান মারসুস’ নামে নতুন একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছে, যা ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর জবাব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ দাবি করেছে যে, ভারত তাদের তিনটি বিমানঘাটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। এর জবাবে পাকিস্তান থেকে ভারতের পাঠানকোট, উধমপুরসহ বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য একটি নতুন হুমকি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
শ্রীনগর থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ভোরপোড়া ছয়টার দিকে শহরে কয়েকটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বর্তমানে পুরো শহর ব্ল্যাকআউটের মধ্যে রয়েছে, যা স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতি চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ উভয় পক্ষই হামলার প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সংবাদদাতারা জানান, পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের ৩২টি বিমানবন্দর থেকে বেসামরিক বিমান চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে।
জনগণের মধ্যে আতঙ্ক: বিস্ফোরণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
পাকিস্তানের করাচির ফায়সাল হাইওয়েতে একাধিক বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে নাগরিক জীবনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। গুলিস্তাঁ-এ-জওহার এলাকার বাসিন্দা জুবেইর আশরাফ বিডি টুয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন, তিনি ভোরবেলা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং আকাশে আলোর ঝলকানিও দেখতে পেয়েছেন। বিস্ফোরণের পরই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, মানুষ তাদের বাড়ির আলো নিভিয়ে দেন এবং নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্র ও শনিবারের মধ্যরাতে বারামুল্লা থেকে গুজরাটের ভুজ পর্যন্ত ২৬টি স্থানে ড্রোন দেখা গেছে, যা সামরিক উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে। এই ড্রোন চলাচল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। কূটনৈতিকভাবে, এই উত্তেজনার মধ্যবর্তী সময়ে শান্তি বজায় রাখা কতটা কঠিন হতে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
- সীমান্ত সঙ্কটের কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল স্থগিত
- পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, ভারতীয় হামলার জবাবে পাল্টা হামলা
- জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্ক
এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারত এবং পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা সতর্ক রয়েছে। তারা মনে করেন, যদি দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমাধান না হয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় দেশকে সহিংসতা পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতামত হল, যুদ্ধের প্রভাব কেবল উভয় দেশে নয়, বরং পুরো অঞ্চলে একটি ঠাণ্ডা যুদ্ধের আবহ তৈরি করতে পারে।
সূত্র: বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।