স্পোর্টস ডেস্ক: ভারতীয় এক ব্যক্তির অভিনব এক প্রতারণার ফাঁদে আটকে সর্বশান্ত হতে চলেছিল রাশিয়ানরা।
ভারতের গুজরাটের মহীসেনার মলিপুর গ্রামের এক খামারে ‘ ভুয়া আইপিএল’ টুর্নামেন্ট চালু করেন শোয়েব দাবদা নামে এক ভারতীয় জুয়াড়ি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভুয়া টুর্নামেন্টটি কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলে ফেলার পর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় সব মিলিয়ে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ‘ভুয়া আইপিএল’ ইন্টারনেটে প্রচার করে রাশিয়ানদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন শোয়েব আর তার সঙ্গীরা।
কিভাবে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন শোয়েব, তার বর্ণনায় পুলিশ কর্মকর্তা ভবেশ রাথোড় বলেছেন, ‘ কয়েক সপ্তাহ আগে গুজরাটের গোলাম মহীশ নামের ব্যক্তির খামারটি ভাড়া করেন শোয়েব। সেখানে হ্যালোজেন বাতি লাগান। আইপিএলের দলের জার্সি কিনে ২১ জন খামার শ্রমিককে আইপিএলের ক্রিকেটার হিসেবে সামনে উপস্থিত করেন। ম্যাচপ্রতি ৪০০ রুপির বিনিময়ে তাদের ভাড়া করেন তিনি। আম্পায়ার সাজিয়ে তাদের হাতে ওয়াকিটকি দেন শোয়েব। বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের কণ্ঠ নকল করেতে পারেন এমন একজনকে আনেন। এরপর মাঠে পাঁচটি এইচডি ক্যামেরা বসিয়ে শুরু করেন টুর্নামেন্ট। পালা করে চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, গুজরাট টাইটানসের জার্সি পরে খেলার অভিনয় করতে থাকেন শ্রমিকরা।
কৃত্রিম সেসব ম্যাচ সরাসরি স্ট্রিমিং করা হয় ইউটিউবে। মাঠের দর্শকদের আওয়াজ ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সংযুক্ত করা হয় স্ট্রিমিংয়ের সঙ্গে।
এভাবেই গুজরাটের ওই গ্রামে চলতে থাকে ভুয়া আইপিএল। আর যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের মাধ্যমে এর ওপর বাজি ধরতে শুরু করেন রাশিয়ানরা।
গ্রেফতার শোয়েব বলেছেন, ৮ মাস রাশিয়ার এক পানশালায় কাজ করেছেন তিনি। সেখানে আসিফ মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ভুয়া আইপিএল আয়োজনের পরিকল্পনাটা মূলত আসে আসিফের মাথা থেকে। এরপর দেশে ফিরে এই প্রতারণার ফাঁদ পাতেন রাশিয়ানদের জন্য।
আর ক্রিকেটে মোটমুটি অজ্ঞ রাশিয়ানরাও ভুয়া আইপিএলের জুয়ায় মাতেন। কিভাবে রাশিয়ানেদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন শোয়েব ও তার সহযোগীরা?
Can’t stop laughing. Must hear this “commentator” pic.twitter.com/H4EcTBkJVa
— Harsha Bhogle (@bhogleharsha) July 11, 2022
পুলিশ জানিয়েছে, শোয়েব সরাসরি টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাজি ধরতেন। আম্পায়ারকে ওয়াকিটকির মাধ্যমে চার-ছয়ের সংকেত দিতে বলতেন। ব্যাটার-বোলাররা জানাতেন এখন কোন শটটি খেলতে হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী বোলাররা সেভাবেই ধীরগতিতে বল করতেন, যাতে চার বা ছয় মারতেন ব্যাটাররা।
এভাবে চোখে ধুলো দিয়ে রাশিয়ার কয়েকটি শহরে বাজি ধরতেন জুয়াড়ি শোয়েব। ভারতের গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশের পর সাড়া ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।