ইসরাফিল নাঈম, ভোলা: সুপারি গাছের খোল। গ্রামে এটা খুবই সহজলভ্য। জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এই খোল দিয়ে যে বিভিন্ন ধরনের ওয়ান-টাইম তৈজসপত্র তৈরি হয় তা অনেকেই জানেন না।
সুপারি গাছের খোল দিয়ে তৈজসপত্র তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার তিন তরুণ উদ্যোক্তা।
তারা হলেন-চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সেনা সদস্য সোয়েব মিয়া, সদর পৌরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিঙ্গাপুর প্রবাসী নূরে আরাফাত এবং ইঞ্জিনিয়ার রিফাত ভূঁইয়া।
জানা যায়, তিন যুবক ইউটিউবে ভিডিও দেখে জানতে পারেন সুপারি গাছের ঝরে পড়া শুকনো খোল দিয়েও নানা জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে উপজেলার জনতা বাজার মেইন সড়কের পাশে গড়ে তোলেন ইকো ড্রিম বিডি নামে ছোট একটি কারখানা। ৮ জন কর্মচারীসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে তাদের কর্মীর মাধ্যমে ঝরে পড়া সুপারি পাতা ক্রয় করে নিয়ে আসেন কারখানায়।
এরপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তৈরি হয় তৈজসপত্র। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- থালা, বাটি, নাস্তার ট্রেসহ ১৪ ধরনের আইটেম। এসব পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানি করার পরিকল্পনা রয়েছে এই তিন যুবকের।
তিন উদ্যোগতাকে স্বাগত জানিয়ে পরিবেশবিদ ও সচেতন মহলের কয়েকজন বলেন, ঝরে পড়া সুপারি গাছের পাতা থেকে তৈরি এসব তৈজসপত্র পরিবেশ রক্ষায় বিশ্ব বাজার দখল করবে।
উদ্যোক্তারা বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনরকম রাসায়নিক দ্রব্য ছাড়াই ঝরে পড়া সুপারির পাতা থেকে এসব তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে। শতভাগ পরিবেশ বান্ধব এসব পণ্য তৈরি করে আয়ের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি আমরা। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে আমাদের পণ্য ইতোমধ্যে অনেকেই ব্যবহার শুরু করেছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান রাহুল বলেন, মানুষের মুখে শুনে গত বুধবার সরজমিনে গিয়ে তৈজসপত্র তৈরির কারখানাটি পরিদর্শন করে এসেছি।
তিনি বলেন, এ উপজেলায় ব্যাপক আকারে সুপারি উৎপাদিত হয়। সঠিক ব্যবহারের অভাবে এর খোল বিনষ্ট বা সাধারণত জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত করেন গ্রামে মানুষজন। কিন্তু সুপারির খোল দিয়ে পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করে আয়ের নতুন পথে হাটছেন উপজেলার তিন তরুণ উদ্যোক্তা। তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।