করোনা ভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে আটক ওভাল গ্রুপের চিফ ভিজ্যুয়ালাইজার হুমায়ূন কবীর ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে, করোনা পরীক্ষা নিয়ে তাদের ভয়াবহ কর্মাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
২৪ জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে তিনি বলেন, বাসা থেকে সংগ্রহ করা করোনা পরীক্ষার নমুনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠাত না জেকেজি হেলথ কেয়ার। সংগৃহীত নমুনা ড্রেনে ও ওয়াশ রুমে ফেলে তা নষ্ট করে ফেলা হতো। আর লক্ষণ বুঝে পজিটিভ-নেগেটিভ সনদ দেয়া হত।
করোনা মহামারীর মধ্যে এমন জালিয়াতি কেন করা হল- এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি আরিফ ও সাবরিনার কেউ-ই। গোয়েন্দারা যতবারই প্রশ্ন করেছেন, তারা ছিলেন নিশ্চুপ।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই দম্পতিকে তিন দফায় মুখোমুখি করা হয়।কিন্তু প্রত্যেকে নিজের দায় এড়িয়ে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন স্থানে সাবরিনা নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। তার জেকেজি কর্মচারীরাও তাকে সেভাবে চেনেন। প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতন নিতেন তিনি। বিভিন্ন স্থানে সাবরিনার পরিচয় দেয়ার প্রমাণ উপস্থাপন করলেও জিজ্ঞাসাবাদে তা অস্বীকার করেন সাবরিনা।
বরং তিনি স্বামী আরিফ চৌধুরীর নির্দেশে জেকেজিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন বলে জানান, আরেকবার বলেন, মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন।
এ সময় গোয়েন্দারা তার সামনে জেকেজি থেকে বেতন নেয়ার তিনটি স্লিপ উপস্থাপন করলে তিনি গোয়েন্দাদের পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন- এসব স্লিপ আপনারা পেলেন কোথায়?
চেয়ারম্যানের বেতন এত অল্প টাকা কেন- এ প্রশ্নে এক কর্মকর্তা বলেন, এটা তো সম্মানী হিসেবে দেখানো হতো। আসলে সবকিছুই তো তাদের। হয়তো অন্য স্টাফদের এটা বোঝানোর জন্য যে, চেয়ারম্যান হয়েও তিনি কত কম টাকা নেন।
করোনা রিপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে ২৩ জুন আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা হয়। আরিফকে থানায় নিয়ে এলে অনুসারীরা তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় এসে ভাংচুর চালায়। এসব ঘটনায় ১৮ জন গ্রেফতার রয়েছেন।
এদিকে জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনার সংশ্লিষ্টতা পায় পুলিশ। রোববার সাবরিনাকে গ্রেফতার করে পরদিন তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
সাবরিনার দেয়া তথ্য যাচাই করতে আরিফ চৌধুরী ও তার ভগ্নিপতি সাঈদকে দিনের ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি। অভিযোগ রয়েছে, ডা. সাবরিনা প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠান জেকেজিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে করোনার নমুনা পরীক্ষার অনুমতি পাইয়ে দেন।
বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার কথা থাকলেও তারা প্রতিটি নমুনা পরীক্ষা থেকে ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। পুলিশের কাছে ১৫ হাজার ৪৬০টি ভুয়া পরীক্ষার প্রমাণ রয়েছে, যা থেকে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাবরিনা-আরিফ চক্র।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।