সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীর আর মন কিছুই যেন চলতে চায় না। অথচ এ সময় মনোযোগ না দিলে সব কাজের গোড়ায় গলদ হতে পারে। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঘুম থেকে উঠেই প্রয়োজনীয় পর্যায়ে নিতে চাইলে বা সোজা বাংলায় দিনের শুরুতেই মগজের ধার বাড়াতে হলে কিছু কাজ সকালের রুটিনে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এবারে এগুলো দেখে নেওয়া যাক।
অ্যালার্মের আওয়াজে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করবেন না
স্নায়ুবিজ্ঞানীদের মতে, ঘুমানোর আগে অ্যালার্ম সেট করার কোনো প্রয়োজন নেই। স্নায়ুতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে খারাপ জিনিসগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যালার্মের বিকট শব্দে জেগে ওঠা। তবে কেউ যদি অ্যালার্ম ছাড়া একেবারেই ঘুম থেকে উঠতে না পারেন, সে জন্য একটি সফট ও সহনীয় টোন বেছে নেওয়া উচিত। আপনি যদি অ্যালার্ম থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি পেতে চান, তবে প্রতি রাতে একই সময় ঘুমোতে যান। এতে দেহঘড়ি নিজেই জাগিয়ে তুলবে আপনাকে নির্ধারিত সময়ে।
সকালে কয়েক মিনিট মেডিটেশন করুন
সকালের কয়েক মিনিট মেডিটেশনের জন্য দেওয়া আবশ্যক। মেডিটেশন শরীরে কর্টিসল ও এপিনেফ্রিন (স্ট্রেস ও উদ্বেগ বৃদ্ধিকারী হরমোন) হ্রাস করে। এতে রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের ধরন নিয়ন্ত্রিত থাকে। মেডিটেশন সম্পূর্ণ মস্তিষ্কে ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতেও কাজ করে, যা সৃজনশীলতা, নতুন কিছু শেখার আগ্রহ, ফোকাস এবং মনোযোগ বাড়ায়। মেডিটেশন মস্তিষ্কের ‘গ্রে ম্যাটার’ বৃদ্ধি করে, যা মস্তিষ্কের কোনো কিছু শেখার এবং স্মৃতি ধারণ করার মতো কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।
ক্যাফেইনের পরিবর্তে পানি পান করুন
স্নায়ুবিজ্ঞানীদের মতে, দিনের শুরুটা কখনোই ক্যাফেইন দিয়ে হওয়া উচিত নয়। তাঁরা ক্যাফেইনের পরিবর্তে পানি পান করার পরামর্শ দেন। আমাদের শরীর রাতের বেলা আট ঘণ্টা বা তার বেশি সময় উপবাসের মধ্য দিয়ে যায়। তাই হাইড্রেটিং তরল দিয়েই আমাদের সকাল শুরু করা চাই। এই লক্ষ্যে চা–কফির পরিবর্তে দুই গ্লাস পানি খেয়ে সকালটা শুরু করুন। এর মধ্যে প্রথম গ্লাসে শুধু বিশুদ্ধ পানি ও পরের গ্লাসে তাজা লেবুর রস মিশ্রিত পানি পান করা যায়।’
জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ব্যায়াম ফিজিওলজিস্টদের দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোনো কাজ করতে হাইড্রেটেড কোনো ব্যক্তির চেয়ে পানিশূন্যতায় ভোগা ব্যক্তির মস্তিষ্ককে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
ঘুম থেকে উঠেই নাশতা করবেন না
আমাদের অন্ত্রে থাকা অণুজীবগুলো নিউরোট্রান্সমিটার অর্থাৎ সেরোটোনিন, ডোপামিন আর সেই সঙ্গে ভিটামিন, হরমোন ইত্যাদি নিঃসরণ করে, যা আমাদের মেজাজ, আচরণ ও মগজের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে৷ উদাহরণস্বরূপ, ৯৫ শতাংশ সেরোটোনিন (ক্ষুধা, হজম, ঘুম এবং সামগ্রিক সুস্থতার নিয়ন্ত্রণে অপরিহার্য একটি নিউরোট্রান্সমিটার) অন্ত্রে তৈরি হয়, যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। সকালে ফল, শাকসবজি, লেবু, গোটা শস্য, বাদাম, টফু এবং বীজজাতীয় খাবার রাখা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।