আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মঙ্গলগ্রহ থেকে নতুন তথ্য পাঠিয়েছে নাসার রোভার।মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা এই তথ্য বিশ্লেষণ করে বলছেন, অতীতে এই গ্রহটিতে তরল ও উষ্ণ পানি থাকার নতুন প্রমাণ পেয়েছেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞানীরা জানান, কিউরিয়াস রোভারটি সিডেরাইট নামে একটি খনিজ আবিস্কার করেছে। এটি বিশ্লেষণ করেই মঙ্গলের অতীত পরিস্থিতি নিয়ে ধারণা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, আগে মঙ্গলে পানি ছিল, ফলে প্রাণের অস্তিত্ব থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১২ সালে মঙ্গলে অবতরণ করে কিউরিওসিটি রোভার। এরপর থেকেই নতুন নতুন তথ্য পাঠাতে থাকে যানটি। ২০২২ ও ২০২৩ সালে তিনটি স্থানে খনন করে এবং খনিজ আবিস্কার করে।
সাধারণত এটি তখনই তৈরি হয়, যখন পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড যুক্ত এক ঘন ও উষ্ণ পরিবেশে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে খনিজ তৈরি হয়। পৃথিবীতে এই ধরনের খনিজ গঠিত হয় কোটি কোটি বছর ধরে, স্যাঁতসেঁতে ও কার্বন ডাইঅক্সাইডে সমৃদ্ধ পরিবেশে। এটি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলছেন শত শত বছর আগে মঙ্গলগ্রহের আবহাওয়া জীবন ধারণের উপযোগী ছিল। পানিও ছিল, ফলে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেল।
এই আবিষ্কার ইঙ্গিত দেয়, কোটি কোটি বছর আগে মঙ্গলে এক সময় ছিল ঘন কার্বন ডাইঅক্সাইডে পূর্ণ বায়ুমণ্ডল, যার ফলে গ্রিনহাউস ইফেক্টের মাধ্যমে জলবায়ু ছিল উষ্ণ এবং মঙ্গলের পৃষ্ঠে তরল পানির হ্রদ, নদী এমনকি সমুদ্রও থাকতে পারে। । তখনকার মঙ্গল অনেকটাই ছিল পৃথিবীর মতো প্রাণবান। গেল ক্রেটারের যে পাথরগুলোয় এই খনিজ পাওয়া গেছে, সেগুলো মনে করা হয় প্রায় ৩৫০ কোটি বছর পুরনো, যখন এই অঞ্চলে একটি বিশাল হ্রদ ছিল।
গবেষণার প্রধান, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালগারির জিওকেমিস্ট বেঞ্জামিন টুটলো। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা মনে করতেন মঙ্গল গ্রহে অনেক কার্বন ডাইঅক্সাইড ছিল। তাহলে এই গ্যাসগুলো কোথায় গেল? তার জবাব খুঁজতেই এতদিন মাথা ঘামানো হচ্ছিল। এই খনিজ আবিষ্কার সেই প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।’
তার মতে, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল যখন ধীরে ধীরে পাতলা হয়ে যায় ও কার্বন ডাইঅক্সাইড কমে যায়, তখন সেই গ্যাস রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পাথরের সঙ্গে মিশে কার্বনেট খনিজে পরিণত হয়ে পাথরের ভেতরে আবদ্ধ হয়ে যায়। এই কারণে আজ মঙ্গলে বায়ুমণ্ডল পাতলা, কিন্তু ভূগর্ভে সেই কার্বনের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।