প্রাণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পানি। সেই জমাট পানির তুষার পাওয়া গেছে মঙ্গলের বিষুবীয় অঞ্চলে। এ আবিষ্কারের ফলে তাই উত্তেজনা হাওয়া লেগেছে বিজ্ঞান সমাজে। কীভাবে পাওয়া গেল এই তুষারের সন্ধান? কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ?
প্রথমবারের মতো মঙ্গলের বিষুবীয় অঞ্চলে তুষারের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। লাল এ গ্রহের ট্রপিক্যাল এবং বিষুবীয় অঞ্চলে এ ধরনের ‘জলজ তুষার’ থাকার বিষয়টিকে এতদিন অসম্ভব বলেই ভাবা হতো। শুধু বৈজ্ঞানিক গবেষণার দিক থেকেই নয়, মানুষের মঙ্গল অভিযানের জন্যও এটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত জার্নাল নেচার জিওসায়েন্স-এ।
এই তুষার শনাক্ত করেছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসার নভোযান এক্সোমার্স ট্রেস গ্যাস অর্বিটার (টিজিও)। এটি মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছেছিল ২০১৬ সালে। পরবর্তীতে মার্স এক্সপ্রেস মিশন ফের শনাক্ত করার মাধ্যমে এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছে। এ অর্বিটারটি মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরে ঘুরে গ্রহটিকে পর্যবেক্ষণ করছে ২০০৩ থেকে। তবে ছবি দেখে তুষার শনাক্তের কাজটি করেছেন সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বার্নের পিএইচডি গবেষক অ্যাডোমাস ভ্যালেন্তিনাস।
শুরুতে যে ‘জলজ তুষার’ লেখা হয়েছে, সেটা দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। আসলে জলজ তুষার বা ওয়াটার ফ্রস্ট মানে জমাট পানির তুষার। অন্য অনেক যৌগ জমেও বরফ বা তুষার হতে পারে। সেগুলো থেকে আলাদা করার জন্য, বিশেষ করে বিভিন্ন গ্রহ ও মহাকাশে পাওয়া তুষার বা বরফের ক্ষেত্রে ওয়াটার আইস বা ওয়াটার ফ্রস্ট, অর্থাৎ পানির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এই তুষার পাওয়া গেছে মঙ্গলের থার্সিস (Tharsis) অঞ্চলে। এটি মঙ্গলের বৃহত্তম ভলক্যানিক রিজিওন, অর্থাৎ আগ্নেয়গিরিময় অঞ্চল। এখানে ১২টি বড় বড় আগ্নেয়গিরি আছে। এর মধ্যে রয়েছে মঙ্গলের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি অলিম্পাস মনসও। এটি একই সঙ্গে সৌরজগতের সবকটি গ্রহের মধ্যে সর্বোচ্চ শৃঙ্গও বটে। উচ্চতায় ২৯.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই শৃঙ্গ পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত এভারেস্টের চেয়েও আড়াই গুণ দীর্ঘ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।