মঙ্গল-যাত্রা যে কারণে মৃত্যুঝুঁকির অংশ মাত্র?

মঙ্গল-যাত্রা

ভয়ংকর মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে মানুষ পাড়ি জমাবে মঙ্গলে। নাসার জ্যোষ্ঠ বিজ্ঞানী ক্রিস ম্যাকি যেমন বলেন, ‘মঙ্গলে যাত্রা একটা বড় ব্যাপার। এতে ঝুঁকি থাকবেই।’ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি কোনগুলো? মৃত্যু কখনোই হাসি-মজার বিষয় নয়। তবু বিজ্ঞানীদের পাগলাটে কাজকর্ম নিয়ে মানুষ রসিকতা করে।

মঙ্গল-যাত্রা

তেমনি এক রসিকতা চালু আছে ইলন মাস্ককে নিয়ে। মাস্ক বলছেন, তিনি চান মানুষ শিগগিরই মঙ্গলে যাক। কিন্তু প্রথম মানুষ হিসেবে তিনি নিজে যেতে চান না! কারণটা আর কিছু নয়, মৃত্যুর আশংকা। মাস্ক নিজেও তা স্বীকার করেছেন। স্পেসএক্সের এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি থাকবে। এড়ানোর কোনো উপায় নেই।’

তবে যেকোনো প্রাথমিক অভিযাত্রাই তো পাগলাটে। মৃত্যুঝুঁকি থাকবেই। এভারেস্ট জয়ের আগে ১৩ অভিযাত্রী মারা গেছে এ পর্বতে চড়তে গিয়ে। চাঁদে যাওয়ার আগে নাসার নভোযান ধ্বংস হয়ে গেছে। একই রকম ঝুঁকি নিয়ে এককালে মানুষ জয় করেছে দক্ষিণ মেরু। আজ সেই একই ঝুঁকি নিয়ে মানুষ পাড়ি জমাবে মঙ্গলপানে।

নাসার জ্যোষ্ঠ বিজ্ঞানী ক্রিস ম্যাকি যেমন বলেন, ‘মঙ্গলে যাত্রা একটা বড় ব্যাপার। এতে ঝুঁকি থাকবেই। নিরাপত্তার যথাসাধ্য চেষ্টা করব আমরা। তবু সবাই এটা বুঝি, মৃত্যুঝুঁকি এই যাত্রার অংশ।’

এরকম একটি যাত্রায় কতভাবেই তো মারা যেতে পারেন নভোচারীরা। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি কোনগুলো? কোন দুর্ঘটনাগুলোর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি? মাস্ক বলছেন, মানুষের বানানো সবচেয়ে বড় রকেটের মাথায় জুড়ে দেবেন নভোযান। আর যেকোনো রকেটের উৎক্ষেপণের সময়ই বিস্ফোরণ ঘটাতে হয়—নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ। যত ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষাই করা হোক না কেন, একটু এদিক-ওদিক হলেই মারা যেতে পারেন নভোচারীরা।

নাসার স্পেস শাটল যেমন ১৯৮১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ৮৩৩ নভোচারীকে বয়ে নিয়ে গেছে নানা মহাকাশ অভিযানে। এত নিরাপত্তার মধ্যেও মারা গেছেন ১৪ নভোচারী। যে দুটি ভয়ংকর দুর্ঘটনায় তাঁরা মারা গেছেন, এই দুটোই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এর একটি, চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনার রহস্য ভেদ করেছিলেন মার্কিন পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান। তিনি দেখিয়েছিলেন, ছোট্ট একটি রবারের ত্রুটির জন্য এই ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটেছিল।

স্পেস শাটলের দুর্ঘটনার হার ছিল ১.৬ শতাংশ। আর অ্যাপোলো প্রোগ্রামের দুর্ঘটনার হার ছিল অনেক বেশি—প্রায় ৯ শতাংশ! স্পেসএক্স ব্যবহার করবে একদম নতুন ধরনের, আরও জটিল ও দীর্ঘযাত্রায় অপরীক্ষিত রকেট। তার মানে, এতে ঝুঁকি বেড়ে যাবে আরও।