জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার চাটমোহর উপজেলায় প্রেমিক যুগলকে আটকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের করোকোলা গ্রামের আব্দুল খালেকের বাড়িতে নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিমাইচরা ইউনিয়নের করোকোলা গ্রামের সুমন আলীর স্ত্রীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলের পরকীয়া চলছিল।
বিভিন্ন সময় তারা একে অপরের সাথে দেখা করতেন এবং একান্তে সময় কাটাতেন। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে প্রেমিকার ঘরে যান প্রেমিক। এ সময় এলাকাবাসী টের পেয়ে তাদের আটক করে। পরে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে সারারাত অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়।
পরে শনিবার সকালে তাদেরকে নিয়ে আসা হয় নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদে। সেখানে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি এবং তার বোন অষ্টমনিষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল সালিশি বৈঠক করেন।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে সালিশ। এতে প্রেমিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি দেওয়া হয় এবং প্রেমিকাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য স্বামীকে বলা হয়। স্বামী রাজি না হলে পরে কাবিননামার ভয় দেখালে রাজি হন। পরে জরিমানার টাকা বিভিন্ন জনের মাঝে ভাগ হয় বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রেমিকের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলেকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। পরে পরিষদের লোকজন ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছেন। এ টাকা পরিষদের চৌকিদারসহ লোকজন ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী সুমন আলীর মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে জরিমানার বিষয়টি জানেন না এবং সেই টাকাও তিনি পাননি বলে তিনি এলাকাবাসীকে জানিয়েছেন।
নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি বলেন, ‘এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পার্শ্ববর্তী অষ্টমনিষার চেয়ারম্যান আমার বড় বোন সুলতানা জাহান বকুল আপার উপস্থিতিতে তাদের সাংসারিক ও সন্তানদের কথা চিন্তা করে বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়া হয়েছে। কারোর প্রতি জোর-জুলুম করা হয়নি। তবে রাতে অভিযুক্তদের শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন বিষয়টি আমি জানতাম না, পরে জেনেছি। আর জরিমানার বিষয়টিও আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল বলেন, ‘আমি সালিশের পুরো সময় ছিলাম না। জরুরি কাজে আমি চলে এসেছিলাম। পরে কী হয়েছে আমি জানিনা। নির্যাতনের বিষয়টিও আমি জানতাম না।’
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। রাতে ওই যুগল আটক হলে সকালে স্থানীয়রা বসে সমাধান করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বা জরিমানা হয়েছে কি না আমি জানি না। নির্যাতনের বিষয়টিও আমাদের জানা নেই। কেউ যদি থানায় অভিযোগ দেয়, তাহলে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেব।’
কাছে পেতে যে টাকা লাগবে তা দেবার সাধ্য আপনার নেই : স্বস্তিকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।