বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: জাপানের একদল বিজ্ঞানী মহাশূন্য থেকে সৌরশক্তি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে এনে তা ব্যবহার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০২৫ সালেই মহাকাশ থেকে আলোকরশ্মির মাধ্যমে সৌরশক্তি আনবে তারা।
জাপান সরকার ও জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জেএএক্সএ এক যুগ ধরে মহাকাশ থেকে আলো নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ২০১৫ সালে জেএএক্সএ-এর বিজ্ঞানীরা মহাকাশ থেকে সৌরশক্তি এনে ১.৮ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করেন।
এবার গবেষণায় আরও এগিয়েছেন তারা। জাপানিজ সংবাদমাধ্যম নিক্কে জানিয়েছে, ২০২৫ সালেই মহাকাশ থেকে আলোকরশ্মির মাধ্যমে সৌরশক্তি আনা হবে। এ লক্ষ্যে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানো হবে বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট। সৌরশক্তি সংগ্রহ করে সেটা পৃথিবীর মাটিতে থাকা রিসিভিং স্টেশনে পাঠাবে অবরিটাল সোলার প্যানেল ও মাইক্রোওয়েভস। সোলার প্যানেল মহাকাশে স্থাপনের সুবিধা হলো সেখানে দিন বা রাতের ভেদাভেদ নেই। সব সময়ই আলো পাওয়া সম্ভব।
জমা করা সৌরশক্তি মাইক্রোওয়েভে রূপান্তর করে পাঠানো হবে বলে মেঘও বাগড়া দেবে না। তবে এভাবে সৌরশক্তি আনতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হবে।
জানা গেছে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে একটি বিশেষ ধরনের মহাকাশযান। এতে প্রতি পাশে অন্তত এক দশমিক দুই মাইল লম্বা বর্গাকার সৌর প্যানেল থাকবে, যা সূর্য থেকে শক্তি সংগ্রহ করে ক্ষুদ্র তরঙ্গের (মাইক্রোওয়েভ) মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠাবে।
জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির গবেষকেরা সৌরশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির একটি সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। আর সেই সীমাবদ্ধতাটি হচ্ছে সৌরশক্তি রাতের বেলায় সক্রিয় থাকে না এবং খারাপ আবহাওয়ায় পর্যাপ্ত শক্তির জোগান দিতে পারে না। তবে গবেষকেরা মহাকাশে স্থাপন ও ব্যবহারের উপযোগী যে সৌরশক্তি ব্যবস্থা (এসএসপিএস) তৈরি করছেন, সেটি আবহাওয়ার প্রভাবমুক্ত থাকবে এবং সব সময় সূর্যের মুখোমুখি অবস্থান করে পৃথিবীভিত্তিক সৌর প্যানেলের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তি উৎপাদন ও সরবরাহ করতে সক্ষম হবে।
যদিও পৃথিবীতে অবস্থানকারী গ্রহীতা (রিসিভার) কীভাবে সেই সৌরশক্তিকে ‘বন্দী’ করবে সেটিও বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাদের প্রস্তাবিত রিসিভারটির ব্যাস হবে এক মাইলের মতো। এটি সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায়ও রাখা যেতে পারে। আর সেখান থেকেই বিদ্যুতের গ্রিডের সঙ্গে রিসিভারটির সংযোগ দেওয়া হতে পারে। মহাকাশে এসএসপিএসের জন্য বিভিন্ন উপকরণ পাঠানো এবং সেখানে সংযুক্ত করার কাজটাও একইভাবে কঠিন হবে বলে মনে করছেন গবেষকেরা।
মহাকাশভিত্তিক সৌরশক্তি উৎপাদন ব্যবস্থার ধারণা যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের গবেষকদের মাথায় আসে সেই ১৯৮০-এর দশকে। কিন্তু প্রযুক্তির সুবিধা অপর্যাপ্ত হওয়ায় এটি অন্যান্য প্রকল্পের আড়ালে পড়ে যায়।
সূত্র: এনগ্যাজেট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।