Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home মহানবী সা.-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন চরম ঔদ্ধত্যের পরিচায়ক
    সম্পাদকীয়

    মহানবী সা.-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন চরম ঔদ্ধত্যের পরিচায়ক

    Saiful IslamNovember 20, 20208 Mins Read
    Advertisement

    ড. মো. কামরুজ্জামান : উইকিপিডিয়ার ভাষ্য মতে, পৃথিবীতে বর্তমানে মোট ধর্ম আছে ৪৩০০টি। বিশ্বনেতৃত্ব আর ধর্মেবিশ্বাসী জনসংখ্যার অনুপাতের ভিত্তিতে পৃথিবীর বৃহৎ ধর্মের সংখ্যা ৫টি। প্রথম বড় ধর্ম খ্রিস্টান, দ্বিতীয় ধর্ম ইসলাম, তৃতীয় হিন্দু, চতুর্থ বৌদ্ধ এবং পঞ্চম ধর্ম ইহুদি। পরিভাষাগতভাবে ধর্ম শব্দটি সর্বপ্রথম ষোড়শ শতাব্দিতে গঠিত ও ব্যবহৃত হয়। শব্দটি সংস্কৃত ‘ধৃ’ ধাতু হতে উৎপত্তি ঘটেছে। এর অর্থ ধারণ করা। সুতরাং বস্তু, প্রাণী ও মনুষ্য বৈশিষ্ট্যাবলীর সমষ্টিই ধর্ম। চুম্বক লোহাকে আকর্ষণ করবে, আগুন পুড়িয়ে দেবে, পানি গড়িয়ে যাবে ও ভিজাবে ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যগুলো বস্তুর ধর্ম। খাওয়া, ঘুম, মলত্যাগ, যৌনসম্ভোগ, বিবাদ, আত্মরক্ষা, পরিবেশে টিকে থাকা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যগুলো প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। পরিচিতি, ভাবের আদান-প্রদান, ভাষা জ্ঞান, সামাজিকতা, ইন্দ্রীয় দ্বারা উপলব্ধি, ইন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ, চিন্তা করে আবিষ্কারের ক্ষমতা, চেতনা ও বোধশক্তি, ইচ্ছাশক্তি, আবেগ-অনুভূতি, ধৈর্য্য, বিবেক, ক্ষমা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যসমূহ হলো মনুষ্যধর্ম। ইসলামের গবেষকগণ ধর্ম বুঝাতে আরবী ‘দীন’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। উইকিপিডিয়া বলেছে, ‘দীন হলো, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক ও সুউচ্চ আধ্যাত্মিক ব্যবস্থাপনার নাম, যার মধ্যে মানুষের সকল প্রশ্নের জবাব নিহিত।’

    উল্লিখিত ৪৩০০টি ধর্মের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্ম, ইসলাম ধর্ম ও ইহুদি ধর্ম আল্লাহপ্রদত্ত তথা আসমানী ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। বাকী ৪২৯৭টি মানবসৃষ্ট তথা মানবরচিত ধর্ম। যেমন হিন্দু ধর্ম। এটি আসমানী ধর্ম নয়। হিন্দু গবেষকদের মতে, বর্তমান দেহসদৃশ মানুষের আকৃতি ২০ লক্ষ বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে। আর উন্নত মস্তিষ্কসম্পন্ন মানুষের আবির্ভাব হয় ১০/১২ হাজার বছর আগে। তাদেরই মধ্য হতে কোনো একটি দল ঘুরতে ঘুরতে সিন্ধুনদের তীরে এসে বসবাস শুরু করে। গড়ে ওঠে সিন্ধুসভ্যতা। অর্থাৎ এটি একটি ভৌগোলিক নাম। তাই ভারতে বসবাসরত সব ধর্মের মানুষই নিজেদের হিন্দু পরিচয় দিতে পারে। এটাই এখন গোটা বিশ্বে হিন্দুধর্ম নামে পরিচিত। তাদের মতে, ধর্মের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর। তাই ধর্মপ্রবর্তকের প্রয়োজনীয়তা অর্থহীন। সুতরাং হিন্দুধর্মের কোনো প্রবর্তক নাই। ধর্মপ্রবর্তক না থাকলেও এ ধর্ম একেশ্বরবাদী অর্থাৎ তারা এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী। যেমন, বেদ গ্রন্থের এক শ্লোকে বলা হয়েছে, ‘একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নাহিনা নাস্তি কিঞ্চান’ এ শ্লোকের অর্থ হলো, ঈশ্বর একজন তার মতো কেউ নেই, কেউ নেই, সামান্য নেই। আরও বলা হয়েছে, ‘একম এবম অদ্বৈতম’ অর্থাৎ ‘তিনি একজন এবং তার মতো দ্বিতীয় কেউ নেই।’ (ঋগবেদ ১/২/৩)। বেদ গ্রন্থে জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ‘জুয়াড়ী ব্যক্তির শ্বাস তাকে অভিশাপ দেয়, তার স্ত্রীও তাকে ত্যাগ করে। জুয়াড়ীকে কেউ কানাকড়ি ঋণ দেয় না।’ (ঋগবেদ/১০/৩৪/৩)। ঋগবেদের ১০/৩৪/১৩ শ্লোকে মদ পান করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঋগবেদের ৮/৩৩/১৯ শ্লোকে নারীদের পর্দায় থাকার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, নারীরা দৃষ্টি অবনত রাখবে, নিজেদের পা সামলে রাখবে আর এমন পোশাক পরবে যাতে কেউ দেহ দেখতে না পায়। এছাড়া সততা, সহনশীলতা, মানবতা ইত্যাদি এ ধর্মের অমূল্য বাণীর অন্তর্ভুক্ত। হিন্দু ধর্মের ন্যায় বৌদ্ধধর্মও আসমানী ধর্ম নয়। এটাও মানবসৃষ্ট। উইকিপিডিয়ার ভাষ্য মতে, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দিতে প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যে (বর্তমান বিহার প্রদেশ) এধর্মের সূত্রপাত ঘটে, যার প্রবর্তক ছিলেন সিদ্ধার্থ তথা গৌতম বুদ্ধ। যিনি শাক্য রাজবংশের এক ক্ষত্রিয়-ব্রাহ্মণ পরিবারে রাজপুত্র হয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এ ধর্ম মানবতায় বিশ্বাসী ধর্ম। বুদ্ধের নিম্নোক্ত নীতিগুলি তারই নির্দেশ করে। ‘মানুষ মানুষের জন্য, যাদের পাঁচ ইন্দ্রীয় আছে তাদের হত্যা কর না, পড়ে থাকা বস্তু তুমি নিও না, বিবাহ বহির্ভূত যৌনাচার কর না, মিথ্যা বলো না, মদ, গাজা ইত্যাদি সেবন করো না, সকল প্রাণীর প্রতি মৈত্রীভাব পোষণ করিও যেমনটি একমাত্র পুত্রের সাথে মাতার মৈত্রীভাব স্থাপিত হয়, হিংসা-রাগ-মোহ পরিত্যাগ করিও, মাতাপিতার সেবা করিও, স্ত্রী-পুত্রের উপকার করিও, বৈধ আয় দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করিও, অহংকার পরিত্যাগ করিও’ ইত্যাদি।

    বাকী তিনটি ধর্ম তথা ইহুদী ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্ম ও ইসলাম ধর্ম আসমানী ধর্ম। উইকিপিডিয়ার ভাষ্য মতে, ইহুদী ধর্মের বয়স ৪০০০ বছর। এটি একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম। তাদের ধর্মপ্রবর্তকের নাম মোশি (মুসা আ.)। যিনি ছিলেন ইয়াকুব (আ.) এর পঞ্চম উত্তরসূরী। মূলত ইহুদী একজন ব্যক্তির নাম। ইয়াকুব (আ.) এর বারো সন্তানের একজনের নাম ছিলো ‘ইয়াহুদা’। এ নাম থেকেই ইহুদী ধর্মের নামকরণ করা হয়েছে। মূলত এটি একটি জাতির নাম, ধর্মের নাম নয়। এ ধর্মের বিশ্বাসসমূহের সাথে ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসের সাথে বেশ মিল আছে। যেমন, মানব জাতির পিতা আদম (আ.), জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ.), ছেলে সন্তানদের খৎনা করানো, একে অপরের সাক্ষাতে সালোম (সালাম) বলা, পশুর রক্ত আর শূকরের মাংস নিষিদ্ধ, সুদ নিষিদ্ধ, নতুন চাঁদের ভিত্তিতে মাস গণনা, আকীকার মাধ্যমে সন্তানের নাম রাখা, জেরুজালেম পবিত্র নগরী, মুসা (আ.) আল্লাহর প্রেরিত নবী, দাড়ি রাখা, টুপি পরা ইত্যাদি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ।

    খ্রিস্টান ধর্মটিও আসমানী ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। ইংরেজি ঈযৎরংঃরধহ শব্দটি দুটি ল্যাটিন শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। শব্দ দুটি হলো, Chirist I Janous. Christ অর্থ ক্রোশ, আর Janous অর্থ অনুসরণ করা। শব্দদ্বয় একত্রিত হলে তৈরি হয় Christianous. যার অর্থ হয় ‘যারা ক্রুশকে অনুসরণ করে।’ অর্থাৎ তারা ক্রুশকে অনুসরণ করে থাকে। এ ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন ঈসা (আ.)। তারা তাঁকে যীশু বলে ডাকে। যার অর্থ, প্রভূর পরিত্রাণ, মানবপুত্র, ঈশ্বরপুত্র ও বিশ্বের অবতার, উদ্বয়ী, বন্ধুত্বপূর্ণ, উদার, গুরুতর, সক্রিয়, ভাগ্যবান, উপযুক্ত, আনন্দদায়ক, মনযোগী, আধুনিক, স্বাভাবিক ইত্যাদি। এ ধর্ম খ্রিস্টীয় প্রথম শতক থেকে যাত্রা শুরু হয়। এ ধর্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, একেশ্বরবাদ ও ত্রিত্ববাদ, ফেরেশতায় বিশ্বাস, আত্মিক পরিশুদ্ধতা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা, ব্যাভিচার নিষিদ্ধ, সহনশীলতা প্রদর্শন, পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধা, ভ্রাতৃত্ব, অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, দোষান্বেষণ না করা, ধর্ম শিক্ষা দেয়া, প্রতিশোধ না নেয়া, ক্রোধ সংবরণ, ঈশ্বরের শোকরানার জন্য উপাসনা করা ইত্যাদি।

    ইসলাম ধর্মটিও আসমানী ধর্ম। এর প্রথম অধ্যাদেশ শুরু হয়েছিল আদম (আ.)কে সৃষ্টি ও তাকে পৃথিবীতে প্রেরণের মধ্য দিয়ে। তিনি ছিলেন বিশ্ব জাহান বিনির্মাণের প্রথম কারিগর। কারণ আল্লাহ তাঁকে সৃষ্টি করে জান্নাতে শিক্ষা দীক্ষা দিয়ে তারপরই পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। যেমন, ‘আল্লাহ আদম (আ.)কে সমস্ত জিনিসের নাম শিক্ষা দিলেন’ (সূরা আল বাকারা: ৩১)। সুতরাং আদম (আ.) ছিলেন পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম মুসলিম। আর এর শেষ অধ্যাদেশ ছিল মুহাম্মাদ (সা.) কে সৃষ্টি, প্রেরণ ও আল কুরআন নাজিল। আর এ শেষ অধ্যাদেশের শুরু হয়েছিল ৬১০ সালে মুহাম্মাদ (সা.) এর নবুয়াত প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে। তিনি শুধু আরবের নবী ছিলেন না। কুরআনরে ভাষায় তিনি ছিলেন গোটা বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ। ‘আমি আপনাকে গোটা বিশ্বের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আল আম্বিয়া: ১০৭)। অতএব, মুহাম্মদ (সা.) নির্দিষ্ট কোনো দেশের ও জাতির নবী বা ধর্মপ্রবর্তক ছিলেন না। তিনি নবুয়াতপ্রাপ্ত হয়ে মুসা ও ঈসা (আ.) ও অন্যান্য ধর্মপ্রবর্তকদের মতই আল্লাহর একত্ববাদ, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানবতার দিকে আহবান করেছিলেন। যেমন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র মানবতার জন্য সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আস সাবা: ২৮)। ‘আমি আসলে শিক্ষক হিসেবেই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসলিম)। ‘আমি প্রেরিত হয়েছি মানবজাতির চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনের জন্য।’ (তিরমিজী)। ৫৭০ সালে মুহাম্মদ (সা.) যখন জন্ম নিয়েছিলেন তখন পৃথিবীটা ছিল ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত। আরবের মানুষ ছিল বর্বর, অসভ্য, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন আর শতধাবিভক্তি একটি উচ্ছৃঙ্খল জাতি। আজকের বিশ্বমোড়ল আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইডেন আর ফ্রান্সের মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ রাষ্ট্রের কোনো নাম নিশানা ও অস্তিত্ব তখন ছিল না। মুহাম্মদ (সা.) একটি আওয়াজের মাধ্যমে মাত্র ২৩ বছরের ব্যবধানে এই গোটা আরবের অদম্য, অশান্ত, অবাধ্য, বাধনহীন ও বিশৃংখল মানুষকে কোনো প্রকার জবরদস্তি ছাড়া এক পতাকার নিচে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি গোটা আরববাসীকে সভ্য ও শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি দাসত্বপ্রথাকে চিরতরে উচ্ছেদ করেছিলেন। ভৃত্য যায়েদকে পুত্রের মর্যাদা দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। নারী শিক্ষা, নারীর মর্যাদা এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। মদ্যপ আরবজাতিকে মদের বিষাক্ত ছোবল থেকে চিরতরের জন্য মুক্ত করেছিলেন। জুয়া চিরতরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন। অন্যধর্মের মানুষের সম্পদ আর রক্ত নিজের সম্পদ আর রক্তের মতো পবিত্র ঘোষণা করেছিলেন। কালো আর সাদার পার্থক্য দূর করেছিলেন। নেতৃত্বের মাপকাঠি হিসেবে তাকওয়া আর যোগ্যতা নির্ধারণ করেছিলেন। অন্য ধর্মের উপাসকের সম্মানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যার যার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। সুদ পরিহার করে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করেছিলেন। চুরি ডাকাতি লুণ্ঠন ইত্যাদি বন্ধ করেছিলেন। নির্বাচনে পরামর্শ ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছিলেন। দুই জাহানের নেতা হয়েও অতি সাধারণ জীবন যাপন করে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সকলের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। এক কথায়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে প্রগতিশীল একজন মহামানব। অবশেষে ৬৩২ সালে এ পৃথিবী ছেড়ে তিনি চলে যান। সকল ধর্ম ও তাদের বিশ্বাসগুলো নিরপেক্ষভাবে পর্যালোচনা করলে যে কেউই বলতে বাধ্য হবেন যে, সকল ধর্মই মানবতাবাদী আর ইসলামই সর্বাধিক মানবতাবাদী ধর্ম। আর মহানবী (সা.) ছিলেন সেই মানবতার বাস্তব দৃষ্টান্ত ও সফল মানবকর্মী। সকল ধর্মপ্রবর্তক যা করেছেন তিনি তার বাইরে কিছু করেননি বরং বাস্তব জীবনে অনুশীলনের মাধ্যমে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের আসনটি অলংকৃত করেছেন। তাঁর বিয়োগের ১৩৮৮ বছর পর হঠাৎ করে আজ তাঁর কার্টুন ছাপানোর বিষয়টি নেহায়েত হাস্যকর, লজ্জাস্কর ও অবমাননাকর। এটা বিশ্ববাসীর কাছে মোটেও বোধগম্য নয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে, তাঁকে অপমান করে, তাঁর ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশে সায় দিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ যে ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন তাতে বিশ্ববিবেক হতবাক। নিন্দা জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছে বিশ্বের ধর্মপ্রাণজনতা। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে তারা যা করলো এটা তাদের কাপুরুষতা, হীনমন্যতা আর ধর্মীয় দৈন্যেরই বহিঃপ্রকাশ। এই মানবপ্রেমিক নবীর শিক্ষায় দীক্ষিত হয়েই আরব মুসলিমগণ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের মাটিতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মশাল জ্বালিয়েছিলেন। ফ্রান্স তার বাইরে নয়। ৭৩০ সালে স্পেনের বাদশাহ আব্দুর রহমান গাফেকী ফ্রান্সের প্রায় অর্ধেক ভূমি জয় করেন। আজও ফ্রান্সে মুসলিম শাসনের প্রভাব দৃশ্যমান। ফরাসীদের ভাষার মধ্যে ৫০০ এর অধিক আরবী শব্দ বিরাজমান। তাদের কাব্যেও আরবী ছন্দরীতির প্রভাব বিদ্যমান। ফ্রান্সের কৃষি উন্নয়নেও মুসলিমদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৭৮৯ সালে সংঘটিত ফরাসী বিপ্লবে মুসলিমদের ভূমিকা ছিল অনন্য। বিপ্লবীরা আরবী ভাষায় বিপ্লবের আহবান জানিয়েছিল। এই ভূমিকার পর ফ্রান্সে মুসলমানদের পূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফরাসীরা মুসলিমদের সাথেই মৈত্রী স্থাপন করেছিল। ৬ লাখ মুসলিম এ যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিল। ১২৯৯ সন থেকে ১৯২২ সন পর্যন্ত ৬২৩ বছর ধরে মুসলিমগণ ইউরোপজুড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটায়। সভ্যতা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ব্যবহারিক আইন, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি জ্ঞান গবেষণায় বিপ্লবের মাধ্যমে ইউরোপকে নিয়ে যায় অনন্য এক স্থানে। ফ্রান্স এখন বিশ্বের ক্ষমতাধর একটি রাষ্ট্র। জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য দেশ এই ফ্রান্স। খুবই অকৃতজ্ঞ ও ঔদ্ধত্বপূর্ণ জাতি। তারা মুহাম্মদী (সা.) সভ্যতার কাছে ঋণী। ঐতিহাসিক পি.কে হিট্টির ভাষায়, ‘ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে মুসলিমগণ যখন স্পেনে পাড়ি জমায় তখন আজকের এই শক্তিধর ফ্রান্স, স্পেন, বুলগেরিয়া তথা গোটা ইউরোপীয়রা নাম লিখতে জানত না। ৬০ বছরে একদিন গোসল পর্যন্ত করেনি। ইউরোপ তখন হাত ধোয়া কী জিনিস তা-ই জানত না।’

    অথচ সেই ইউরোপের যত মাথা ব্যথা মুসলিমদের নবীকে নিয়েই! মুসলিম বিশ্ব যখন ফ্রান্সের এই ধৃষ্টতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর তখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সুর কিছুটা নরম হলেও তিনি তার ভুল স্বীকার করেননি। সুতরাং এই মুহূর্তে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের উচিত, মুসলিম বিশ্বের কাছে ক্ষমা চাওয়া, বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া, সেদেশে বসবাসরত ৭০ লাখ মুসলিমের উপর নির্যাতন বন্ধ করা ও তাদের নাগরিক এবং ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করা।

    লেখক: অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
    [email protected]

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Related Posts
    Iqbal Karim Bhuiyan

    সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার সতর্কবার্তা: ১/১১ এর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে

    May 24, 2025
    What Is Artificial Intelligence?

    What Is Artificial Intelligence? Details of Modern AI

    February 11, 2025

    বৈষম্যমুক্ত সমাজ নির্মাণে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন অপরিহার্য

    October 16, 2024
    সর্বশেষ খবর
    RoRo: Revolutionizing the World of Music with a Fusion of Culture and Rhythm

    RoRo: Revolutionizing the World of Music with a Fusion of Culture and Rhythm

    Monetize a Niche Blog in 2025: Proven Strategies for Passive Income

    Monetize a Niche Blog in 2025: Proven Strategies for Passive Income

    Chen Joong: Martial Arts Mastery Captivating Global Audiences

    Chen Joong: Martial Arts Mastery Captivating Global Audiences

    Hooked Creativity: Pioneering Personalized Shopping Experiences

    Hooked Creativity: Pioneering Personalized Shopping Experiences

    Lisa: The Inspirational Icon Shaping the Future of K-Pop

    Lisa: The Inspirational Icon Shaping the Future of K-Pop

    Erin Lim: The Charismatic Connector of Entertainment Worlds

    Erin Lim: The Charismatic Connector of Entertainment Worlds

    Alix Earle: The Relatable It Girl Revolutionizing Social Media Authenticity

    Alix Earle: The Relatable It Girl Revolutionizing Social Media Authenticity

    Metaverse Connect: Top Virtual Reality App 2025

    Metaverse Connect: Top Virtual Reality App 2025

    HT Media Digital Evolution: Leading the News Industry Revolution

    HT Media Digital Evolution: Leading the News Industry Revolution

    Faceless YouTube Video Creation Guide

    Faceless YouTube Video Creation Guide

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.