জুমবাংলা ডেস্ক : সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। গত জানুয়ারি মাসে যেখান থেকে পরিকল্পনার সূচনা হয়েছিল, সেই একই বিষয় নিয়ে ২০২৫ সালের মে মাসে আবারও মুখর হয়েছে প্রশাসনিক মহল। মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী, আগামী ২০ মে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই ভাতা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
Table of Contents
মহার্ঘ ভাতা কী এবং কেন এটি আলোচনায়
মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance – DA) মূলত মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি কর্মচারীদের আর্থিক সুরক্ষা দিতে প্রবর্তিত একটি অর্থনৈতিক সহায়তা। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং আয়-বৈষম্যের কারণে এই ভাতার প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালো হয়েছে।
সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে এটি চালু করার পরিকল্পনা করছে, যার মাধ্যমে ১ থেকে ৯ গ্রেডের কর্মচারীরা পেতে পারেন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ এবং ১০ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা পেতে পারেন ২০ শতাংশ হারে ভাতা।
২০২৫ সালের বাজেট প্রস্তাবে মহার্ঘ ভাতা অন্তর্ভুক্তির প্রস্তুতি
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে আগামী ২০ মে একটি বৈঠকে এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এই সিদ্ধান্ত বাজেট বক্তৃতার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে প্রায় ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা।
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বিদ্যমান ৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল করা হবে। সেই পরিবর্তে নতুন ভাতা কাঠামো কার্যকর হবে যা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ দূর করতে সহায়ক হবে।
গ্রেডভিত্তিক হার ও ব্যয় বিশ্লেষণ
নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য (১-৯)
- ভাতা হার: ১০% থেকে ১৫%
- প্রস্তাবিত ব্যয়: প্রায় ৬৫০০ কোটি টাকা
উচ্চ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য (১০-২০)
- ভাতা হার: ২০%
- প্রস্তাবিত ব্যয়: আনুমানিক ৬০০০ কোটি টাকা
এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ ছাড়া এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে সরকার এই বরাদ্দকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করছে।
বিশেষ প্রণোদনার বাতিল ও তার প্রভাব
সরকারি চাকরিজীবীদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট হিসেবে চলমান ৫% প্রণোদনা ২০১৫ সালের অষ্টম বেতন কাঠামোর অংশ হিসেবে ছিল। তবে এবার সেই প্রণোদনা বাতিল করে নতুন মহার্ঘ ভাতা চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার। এটি কার্যকর হলে বর্তমান বেতন কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।
প্রেক্ষাপট ও নীতিগত দিক
পূর্ববর্তী পরিকল্পনার স্থগিত হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল অর্থনৈতিক চাপ এবং মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি। তাছাড়া, নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের জন্য ইনক্রিমেন্ট যথাযথ সমাধান আনতে পারছিল না। তাই নীতিনির্ধারকরা আবার মহার্ঘ ভাতার দিকে নজর দিয়েছেন।
এই উদ্যোগ সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারেও সহায়ক হবে বলে প্রশাসনিক মহলের ধারণা।
বাজেটের ব্যয় কাঠামোতে সম্ভাব্য পরিবর্তন
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা বাবদ Tk ৮২,৯৯০ কোটি বরাদ্দ ছিল, যা মোট বাজেটের ১০.৪১%। সম্ভাব্য মহার্ঘ ভাতা যুক্ত হলে এই ব্যয় বেড়ে Tk ৯৭,০০০ কোটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
নতুন বাজেট কাঠামোতে এই খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। অর্থ বিভাগ ইতোমধ্যে এই সংক্রান্ত নানা দপ্তরের সুপারিশ সংগ্রহ করেছে।
২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা: এনসিটিবি প্রকাশ করলো বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিভাজন
FAQs
- মহার্ঘ ভাতা কাদের জন্য প্রযোজ্য?
এই ভাতা শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রযোজ্য। গ্রেডভিত্তিক হার অনুযায়ী এটি বরাদ্দ করা হবে। - মহার্ঘ ভাতা কবে থেকে কার্যকর হবে?
প্রস্তাব অনুযায়ী, এটি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর হতে পারে। - এই ভাতার হার কত?
১-৯ গ্রেডের জন্য ১০-১৫% এবং ১০-২০ গ্রেডের জন্য ২০% প্রস্তাব করা হয়েছে। - বিশেষ প্রণোদনা কি বাতিল হবে?
হ্যাঁ, মহার্ঘ ভাতা চালু হলে ৫% বিশেষ প্রণোদনা বাতিল করা হবে। - এই উদ্যোগের সম্ভাব্য ব্যয় কত?
৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।