জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মানাস নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী চার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর অভিযোগ উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করায় নানা ধরনের দেশীয় প্রজাতির মাছের ক্ষতি হচ্ছে।
শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চিকাশি ইউনিয়নের সোনারগাঁ গ্রামের মাঝ দিয়ে বহমান ইছামতি নদী। এই নদীটি দীর্ঘদিন ধরে মাছের জন্য উন্মুক্ত জলাশয় হিসাবে প্রশাসনিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থায় সোনারগাঁ গ্রামে সেতুর উত্তর পাশে প্রায় সাতশ মিটার এলাকায় নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে পৃথক ৩টি স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন। সেই বাঁশের বেড়ার উপরের অংশে অবৈধ কারেন্ট সুতার জালও দেওয়া হয়েছে।
সেখানে সোনারগাঁ গ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, রোমজান আলী ও বিনয় চন্দ্র শীল পৃথকভাবে প্রায় দুই মাস ধরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের গোসল কিংবা কাপড় পরিষ্কারের জন্য নদীতে নামতে দেওয়া হয় না। এলাকাবাসী নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। স্থানীয়দের নদী কেন্দ্রীক স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই এলাকায় কমপক্ষে দু’শ জেলে পরিবার বসবাস করে। তারা সবাই মানাস নদীসহ খাল ও বিলে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালায়। কিন্তু বর্তমানে নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে সেখানকার জেলে পরিবারের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
তারা জানান, অবৈধভাবে দখল করা খাল-নদী দখলমুক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি জলাশয় থেকে যেন সবাই মাছ ধরতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এতে স্থানীয় জেলে পরিবার বেশ উপকৃত হবে।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃতিতে এখন বর্ষাকাল। এ সময় দেশীয় প্রজাতির মাছ বংশ বিস্তার করে। এ সময় বাঁশের বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে নদীর দেশি প্রজাতির নানা ধরনের মাছ উন্মুক্তভাবে বিস্তার লাভ করতে পারছে না। ফলে নদী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির সিং, মাগুর, টেংরা, বোয়াইল, পাবদা, পুটি, কই, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ।
এ বিষয়ে মাছ চাষি বিনয় চন্দ্র শীল বলেন, প্রায় দুই মাস আগে নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁশের তৈরি বানা দিয়ে মাছ চাষের ব্যবস্থা করেছি। এর আগে অনেকেই এভাবে নদীতে মাছ চাষ করেছে। উন্মুক্ত জলাশয়ে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ বিষয়ে আইন আমার জানা নেই। বিষয়টি অনিয়ম হলেও জীবিকার তাগিদে এ কাজ করেছি।
ধুনট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মীর্জা ওমর ফারুক বলেন, নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ ধরা বা চাষ করা বেআইনি। উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মাছ চাষের কোনো অনুমোতি নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।