বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম : সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড দেশের জন্য অশনিসংকেত। এটা বিএনপির কাজ বলে নিশ্চয়ই হালকা করে দেখা হবে না। এমন ভয়াবহ ধ্বংস আমরা কল্পনাও করতে পারি না। যেখানে আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল কর্মীদের নয়জনকে জীবন দিতে হয়েছে। হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। সম্পদের চেয়ে মূল্যবান ৫০টি জীবন এ পর্যন্ত হারিয়ে গেছে। ৫০০ জনের বেশি আহত। তাদের কতজন যে প্রাণ হারাবে কারও জানা নেই। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে। আশা করব, এ অগ্নিকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞকে সরকার হালকাভাবে নেবে না। এটা হয় অসাবধানতা বা ছেলেখেলা অথবা বাংলাদেশের অর্থনীতি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্যই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের প্রতিফলন। এখন কারও টাকাপয়সা হলেই তারা সরকারের লোক হয়ে যায়। পোশাকে-আশাকে, চালচলনে রাজা-বাদশাকেও হার মানায়। এ ঘটনার যথাযথ প্রতিকার বা ব্যবস্থা না হলে আমাদের অর্থনীতিতে ধস নামবে। তাই কারও ওপর অযথা দোষ না চাপিয়ে সত্যিকারের ঘটনা উদ্ঘাটন করা উচিত। যাদের কোনো কিছু সঠিকভাবে পরিচালনার যোগ্যতা নেই, তাদের এভাবে যেখানে সেখানে কেমিক্যাল নিয়ে নাড়াচাড়া এ তো মৃত্যু নিয়ে খেলা করার শামিল। তাই আশা করব সরকার দেশের স্বার্থ বিবেচনা করবে।
স্বপ্নের সেতু পদ্মা ২৫ জুন শুভ উদ্বোধন হতে চলেছে। দেশে সেতু আছে অনেক। সব সেতু স্বপ্নের নয়, কল্পনারও নয়। কিন্তু পদ্মা সত্যিই স্বপ্নের সেতু। আমরা এখনো পাকিস্তানে থাকলে পদ্মা সেতু দূরের কথা, বুড়িগঙ্গায়ও সেতু হতো না। এসবের গোড়ার কথা স্বাধীনতা। স্বাধীনতা কোনো হেলাফেলার জিনিস নয়। স্বাধীনতা একটা জাতির মুক্তির দুয়ার। ছোট্ট ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে যেমন বিশ্ব দেখা যায়, ঠিক কোনো ভূখন্ডের স্বাধীনতাও এক জীর্ণ কুটিরের দুয়ার খোলার মতো। পদ্মা সেতু নিয়ে নানান উথালপাথাল হয়েছে। পদ্মা সেতু কোনো ব্যক্তির নয়, পদ্মা সেতু সমগ্র জাতির, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের, বাংলাদেশের মানুষের রক্ত-ঘামের বাস্তবায়ন। এ সেতু নিয়ে নেত্রী শেখ হাসিনাকে যেমন ছোট করা উচিত নয়, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাই পদ্মা সেতু বানিয়েছেন তা-ও নয়। পদ্মা সেতু বানাতে শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় অবদান আছে। তাঁর এমন দুর্বার দৃঢ়তা না হলে এখনই হয়তো পদ্মা সেতু হতো না। এ ক্ষেত্রে তাঁর দৃঢ়তা, সাবলীলতা সর্বজয়ী। বিশ্বব্যাংক হাত গুটিয়ে নিলে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের অভাবনীয় প্রতিজ্ঞা সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিল। অনেকে ব্যাপারটা বিশ্বাস করতেই চাননি। পুরুষের পেটে বাচ্চা জন্মানোর মতো অকল্পনীয় মনে করেছে নিজস্ব উদ্যোগে বা অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন। কিন্তু যেভাবেই হোক ভুলত্রুটি যা-ই থাকুক আজ পদ্মা সেতু এখন বাস্তব সত্য। ‘ঐ নূতনের কেতন ওড়ে … তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ নতুন আসবে, নতুন পুরান হবে, আবার দিগি¦দিক কাঁপিয়ে নতুনের আবির্ভাব হবে। এ দুনিয়ায় কালপরিক্রমায় কোনো কিছুই যেমন নতুন নয়, কোনো কিছুই তেমন পুরানও নয়। আমরা কোনো কিছুর সৃষ্টি করতে পারি না। মহান স্রষ্টার সৃষ্টির শুধু রূপান্তর করতে পারি। আকার পরিবর্তন করতে পারি, কাঠ-বাঁশ কেটে এটাওটা করতে পারি, ঘর বানাতে পারি, দালান তুলতে পারি- এ রকম আরও অনেক কিছু করতে পারি। কিন্তু আদি সৃষ্টি আমাদের হাতে নয়, সবই স্রষ্টার হাতে। পদ্মা সেতু কারও নামে না করে সবচাইতে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভাবীকালে সেতুর নামকরণ নিয়েও গবেষণা হবে এবং সে গবেষণায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশংসা পাবেন। কারণ এখন তাঁর ইচ্ছা ছাড়া গাছের পাতা নড়ে না, বাতাস বয় না, পদ্মার পানি বয়ে যায় না। তাই কেউ মানুন আর না-ই মানুন, আমি বিশ্বাস করি, পদ্মা সেতুর নামকরণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতিফলন। তাই বলব, যখন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলবে, কাউকে এপার-ওপার হতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হবে না, কষ্ট করতে হবে না। পদ্মাপাড়ে যে কর্মচাঞ্চল্য ছিল, হাজার হাজার মানুষের রুটি-রুজির সংস্থান হতো তারা কোথায় যাবে, তাদের কী হবে, তারা আদৌ খেতে পাবে কি পাবে না এসবের খবর কেউ রাখবে না। হয়তো কত সোনার সংসার অন্ধকারে তলিয়ে যাবে, কত ফল বিক্রেতা, কত ছোট ছোট মাছ বিক্রেতা, কত হোটেল মালিক-কর্মচারী পদ্মার পানির মতো ভেসে যাবে তার খবর কি কেউ রাখবে? আমি যখন ছোট ছিলাম কালিহাতী আর পুংলীতে দুটি ফেরি ছিল। দুই পাড়ে কত দোকানপাট আর ফেরি চালাত বিহার-ওড়িশা বা মধ্য প্রদেশের কিছু মানুষ। এটাই বোধহয় তাদের জাত ব্যবসা। অন্য ছোটখাটো ফেরিঘাটেও অবাঙালিদের দেখতাম মস্তবড় ভুঁড়ি নিয়ে ক্যাশবাক্সের পাশে বসে থাকত, ১-২ পয়সা পারাপারে নিত। কালিহাতী ও পুংলী সেতু হওয়ার পর সেই দোকানপাটও নেই, সেই অবাঙালি পাটনিরাও নেই। পদ্মা সেতু চলমান হলে দুই পারের আলো ঝলমলে ইন্দ্রপুরীর ইশারা অন্ধকারে মিলিয়ে যাবে। তাদের নিয়েও কিছু ভাবার আছে, ভাবতে হবে।
অন্যদিকে পদ্মা সেতুর টোল নিয়ে যা শুনছি মনে হয় তা তেমন যুক্তিযুক্ত নয়। পদ্মা সেতু টোল নিয়ে ব্যবসা করার জন্য নিশ্চয়ই বানানো হয়নি। পদ্মা সেতুর জন্য জাতীয় অর্থনীতির যে উন্নতি হবে, তা কয়েক বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর ব্যয়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি জাতীয় আয় হবে। তাই অভাবনীয় টোল নির্ধারণ কখনো যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। আমাকে জিজ্ঞেস করলে বলব, পদ্মা সেতু টোল নিয়ে সেতুর খরচ তোলার মানসিকতা সম্পূর্ণই সেকেলে, অর্থহীন। জাতীয় আয়ে পদ্মা সেতু যে অবদান রাখবে তাই আমাদের মাথা সমান। সেজন্য সেতু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোকজন থাকবে, গাড়িঘোড়া এপাশ-ওপাশ করবে তাদের হিসাব রাখার জন্য অবশ্যই একটা টোল থাকতে পারে। কিন্তু তা ফেরি পারাপারের মাশুলের অর্ধেকের বেশি হওয়া মোটেই উচিত নয়। মোটরসাইকেল ১০-২০ টাকা, ছোট গাড়ি ১০০, বড় গাড়ি ৪০০-৫০০, তারও বড় গাড়ি বড়জোর হাজারের ওপর টোল হওয়া উচিত নয়। জানি আমার পরামর্শ বা ভাবনা অনেকের পছন্দ হবে না। বঙ্গবন্ধু থাকলে, হুজুর মওলানা ভাসানী থাকলে তাঁরা অবশ্যই শুনতেন, মানতেন।
পদ্মা সেতু যেমন কারও একার কৃতিত্ব নয়, শুধু কোনো সরকারেরও নয়। এর কৃতিত্ব দেশবাসীকে দেওয়া উচিত। পদ্মা সেতুতে আমার গাড়ির চালকেরও অবদান আছে, পয়সা আছে, আমার স্ত্রীর আছে, আমার আছে, আমার ছেলেমেয়েদেরও আছে। যখন পদ্মার জন্য তহবিল সংগ্রহ করা শুরু হয়েছিল তখনই আমরা ২-৪ হাজার টাকা দিয়ে ভূমিকা রেখেছিলাম। তা ছাড়া বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক পদ্মা সেতুর জন্য ভূমিকা রেখেছে। কমবেশি অর্থ সাহায্য করছে সেটা ভ্যাটের মাধ্যমে বা ট্যাক্স কিংবা জমির খাজনার মাধ্যমেই হোক। কোনো না কোনোভাবে ১৮ কোটি মানুষেরই ভূমিকা আছে। বর্তমান সরকার অনেক ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আগমনে বিশ্বব্যাপী এক জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি সম্ভব ছিল, করোনাকালে সম্ভব ছিল, সম্ভব ছিল যখন আরব দেশগুলোয় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল তখন। পদ্মা সেতু নিয়েও একটা সার্বিক জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা সরকার এবং প্রবীণ দল আওয়ামী লীগ নিতে পারে। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথা দেশের মানুষের ওপর প্রচন্ড প্রভাব ফেলেছে, ‘সেতু উদ্বোধনে সবাইকে দাওয়াত করা হবে। এমনকি আইনে কোনো বাধা না থাকলে বেগম খালেদা জিয়াকেও করা হবে।’ খুবই মূল্যবান কথা। আইনে অনেক কিছুই থাকে। তার পরও বিশেষ বিবেচনায় সরকার অনেক কিছু করতে পারে। সেতু আরও অনেক হবে, আরও অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটবে। কিন্তু এ পদ্মা সেতু আর হবে না। এটা বিশ্বের বিস্ময়, বিশেষ করে বাঙালির জন্য। ২-৪-১০-২০ বছর পর পদ্মায় হয়তো আরও সেতু হবে। কিন্তু মাওয়া-কাঁঠালবাড়ির এ পদ্মা সেতু আর কখনো কোনো দিন হবে না। তাই এ পদ্মা সেতু উদ্বোধনও একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হয়ে থাকবে। পদ্মা সেতু যেমন সম্মানের, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের একটা আলাদা পরিচিতি তুলে ধরেছে, ঠিক তেমনি পদ্মা সেতু নিয়ে অনেকে নাজেহালও হয়েছেন। তাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই সেসবের প্রতিকার হওয়া উচিত। বাংলাদেশের জন্মের পর কোনো প্রকল্পে অনিয়মের দায় মাথায় নিয়ে কোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়নি। সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদ্মার দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করতে হয়েছে। আমার ভাতিজা সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সারকে কলঙ্কিত হতে হয়েছে। কলঙ্কিত হয়েছে সাবেক সচিব এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন এমনকি ইলিয়াস দাদাভাইয়ের ছেলে নিক্সনকেও। এঁরা যে আদালতের মাধ্যমে নিরপরাধ, নিষ্কলুষ, নিষ্কলঙ্ক প্রমাণিত হলেন তাঁদের নিয়ে সরকার কী করল? তাঁদের নিয়ে তো গর্ব করার কথা। সেদিন যেমন বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিকে পাশে নিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পদ্মা সেতুর শুভসূচনা অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংককে দাওয়াত করা হবে বলেছেন তেমনি পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর এক পাশে সেতুমন্ত্রী এবং আরেক পাশে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের কি আসন হবে? পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের আগেই এক দিনের জন্য হলেও সৈয়দ আবুল হোসেনকে তাঁর মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। এ তো একটা রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি। রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি রাষ্ট্র কখনো ভাঙতে পারে না। দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ আনায় আবুল হোসেন পদত্যাগ করেছিলেন। কানাডার কোর্ট তাঁদের নির্দোষ বলার সঙ্গে সঙ্গেই সৈয়দ আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব ফিরে পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু না, তাঁকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। কেন হয়নি সেটাই প্রশ্ন। এমন তো হওয়ার কথা নয়। সৈয়দ আবুল হোসেন যথার্থ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুগত-ভক্ত। আমি বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে ভালোবাসি, বিশ্বাস করি, সৈয়দ আবুল হোসেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সে রকম ভালোবাসেন, হয়তো আমার চাইতেও বেশি ভালোবাসেন। সেই মানুষটা কেন তাঁর হারানো ভাবমূর্তি ফিরে পাবেন না? পদ্মা সেতু একটা ঐতিহাসিক বিষয়বস্তু। যিনি এটার শুরুতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন যে যা-ই বলুক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জীবনের শ্রেষ্ঠ সৌভাগ্য তাঁর তত্ত্বাবধানে পদ্মা সেতু সম্পন্ন হলো। এটা তাঁর জীবনেও এক চরম সত্য এবং গভীর সম্মানের ও গৌরবের। তাই দুজনকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে বসিয়ে উদ্বোধন করলে খুব একটা খারাপ হবে বলে মনে হয় না। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। সেদিন যদি আমাদের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর আতাউল গনি ওসমানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকতেন, একপাশে মিত্রবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাগজিৎ সিং অরোরা, আরেক পাশে পাকিস্তানের পরাজিত সেনাপতি টাইগার আমির আবদুল্লাহ নিয়াজি দুজন দুই পাশে স্বাক্ষর করতেন আর সেই স্বাক্ষর সত্যায়িত করতেন আমাদের প্রধান সেনাপতি বা মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক আতাউল গনি ওসমানী কতই না ঐতিহাসিক ঘটনা হতো। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভার্সাই চুক্তির চাইতে মর্যাদাপূর্ণ হতো। পদ্মার পাড়ে সেতু উদ্বোধনে মধ্যখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, দুই পাশে দুই মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং ওবায়দুল কাদের এমন হলে কেমন হয়?
অনেক বছর আগে মোগল সম্রাট হুমায়ুন পাঠান বীর শেরশাহর সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার পথে যমুনা নদীতে ডুবে যাচ্ছিলেন। এক ভিস্তিওয়ালা তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছিল। পরাজিত সম্রাট হুমায়ুন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিয়ে রাজস্থানের অমরকোটে আশ্রয় নিয়েছিলেন। যে অমরকোটে শ্রেষ্ঠ মোগল সম্রাট আকবরের জন্ম। হুমায়ুন ইরান-তুরান নানা জায়গায় ঘোরাফেরা করে শক্তি সংগ্রহ করে আবার দিল্লির সিংহাসন দখল করেন। দিল্লি পুনর্দখলের পর সম্রাটের সেই ভিস্তিওয়ালার কথা মনে হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে সেই ভিস্তিওয়ালাকে এনে এক দিনের জন্য তাকে সম্রাট বা বাদশাহ বানিয়েছিলেন। ইদানীং সমাজে খুব একটা ভালো লোক দেখা যায় না। আইন-আদালতের কাছে নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ প্রমাণিত হয় না। সৈয়দ আবুল হোসেন কষ্টিপাথরে যাচাই করা খাঁটি সোনার মতো পূতপবিত্র হয়ে এসেছেন। তাই তাঁকে পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনে এক দিনের জন্য হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর পাশে বসাবেন এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। অন্য যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, অসম্মানিত হয়েছেন তাঁদেরও যথাযথ সম্মান দেবেন, এটাই সবার আশা।
এ পর্বে অন্য কিছুতে যেতে মন সায় দিচ্ছে না। তবু বিরক্তিভরা মন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলছি। বৃহত্তর রংপুরের তো অনেককেই চিনি। আপনার বিয়ের ঘটকালি করেছিলেন মন্ত্রী মতিউর রহমান। কত গুণী মানুষ ছিল রংপুরে। আপনার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কথা খুব একটা শুনিনি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের দুরবস্থার সময় দুবার চা খায় বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন। চালের দাম, তেলের দাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম গরিব খেটেখাওয়া মানুষের নাগালের বাইরে। তা-ও তাঁর ছেলেখেলার অন্ত নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটু দেখুন, বাণিজ্যমন্ত্রীকে সামাল দিলে বাজারের অর্ধেক জটিলতা আপনাআপনিই শেষ হয়ে যাবে।
লেখক : রাজনীতিক।
www.ksjleague.com
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।