জুমবাংলা ডেস্ক: হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় নারায়ণগঞ্জের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তার কথিত স্ত্রী ও মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টা থেকো ২ টা পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হাসানের আদালতে ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনাসহ সাক্ষ্য দেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন জানান, ৪১ বার বাদী ঝর্ণাকে মামুনুল হকের আইনজীবীরা বলেছেন আপনি মামুনুল হক এর স্ত্রী। জবাবে প্রতিবারই না বলেছেন ঝর্ণা বেগম।
তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বলেছেন, ঝর্ণার স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ার সুবাদে মামুনুলের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তার। পরবর্তীতে তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে মামুনুল তাকে নানা জায়গায় নিয়ে যেতেন এবং তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন। এছাড়াও মামুনুল হক তাকে কোথায় কখন নিয়ে ধর্ষণ করেছেন তা বলেছেন মামলার বাদী। ঝর্ণার জবানবন্দি শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবিরা তাকে জেরা করেছেন।
এর আগে কাশিমপুর কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় সকালে মামুনুলকে আদালতে আনা হয়। এসময় মামুনুল হকের অনুসারীরা আদালত চত্বরে অবস্থান নেয়।
নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুদ্দিন আহমেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে ঝর্ণা বেগমকে নিয়ে জনতার হাতে অবরুদ্ধ হওয়ার পর স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন মামুনুল হক। এদিকে মামুনুল তার সঙ্গে থাকা নারীর পরিচয় আমিনা তায়্যেবা বললেও তার প্রকৃত নাম জানা গেছে জান্নাত আরা ঝর্ণা। ৩০ বছর বয়সী ঝর্ণা ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কারাগার গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়ালিউর রহমান ওরফে ওলি মিয়ার মেজো মেয়ে। ওয়ালিউর গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। ঝর্ণার নয় বছর বয়সে বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট থানার কোদালিয়া ইউনিয়নের কুচুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লার সঙ্গে বিয়ে হয়।
পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন ঝর্ণা। গত ৩ নভেম্বর এ মামলায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন হয়।
প্রসঙ্গত, মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর, মহাসড়কে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ, আওয়ামী লীগ অফিস, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি ও সাংবাদিক একটি মামলা দায়ের করেন। তার কিছুদিন পর স্থানীয়রা আরও তিনটি মামলা দায়ের করেন। ৬টি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় প্রধান আসামি মামুনুল হক।
পরে ৩০ এপ্রিল সকালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী জান্নাত আরা ঝর্ণা। যাকে মামুনুল হক তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।