জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা চার শিক্ষার্থীকে মারধরের বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছেন ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান করছেন মারধরের শিকার মো. মুকিম চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও বিশ্ববিদ্যাল প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা না দেওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মো. মুকিম চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাকে অতিথি কক্ষে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পরে হলের ছাদে নিয়ে আমাকেসহ আরও তিনজনকে হল সংসদের ভিপি অনন্তের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের হল ক্যান্ডিডেট আমির হামজা, আনোয়ার হোসেন, কামাল উদ্দিন রানা, ইমন ও শাহিন আলমসহ আরও কয়েকজন পালাক্রমে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে পেটায়। পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের মারধরের মূল কারণ একটি স্ক্রিনশটকে কেন্দ্র করে। যেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমিসহ আরও তিনজকে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। ফলে বিকেলে শাহবাগ থানা থেকে আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
অবস্থান কর্মসূচি কতক্ষণ চলবে এমন প্রশ্নে এই শিক্ষার্থী বলেন, নিরপরাধ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দোষীদের শাস্তি দাবি করে এখানে অবস্থান নিয়েছি। যতক্ষণ না, আমি এর সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমি অবস্থান চালিয়ে যাব।
জানা যায়, শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা সন্দেহে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হলের গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে আসে ছাত্রলীগের কর্মীরা। শিবিরের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না জানতে ছাত্রলীগের নেতারা তাকে মানসিক চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু স্বীকার না করায় ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন তারা। পরে মোবাইলের মেসেঞ্জারে চেক করে মুকিমের আরও তিনজন বন্ধুকে ডেকে আনা হয়। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দিন ও আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দিন।
এ সময় হল শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, হল সংসদের সহ-সভাপতি সাইফুল্লাহ আব্বাসি অনন্তসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা এসে রড, লাঠি দিয়ে তাদের মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন তারা।
নির্যাতনের পর আহত শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহযোগিতায় শাহবাগ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন । রাতেই তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান পুলিশ।
পরে বুধবার বিকেল তিনটার দিকে মুচলেকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক। সূত্র : সারাবাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।