মার্কিন নির্বাচনে ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হয়ে উঠেছেন টেলর সুইফট। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পক্ষ নিয়ে এরই মধ্যে তাঁর পালে সমর্থনের সুবাতাস বইয়ে দিতে পেরেছেন। টেলর সুইফটের সংগীতজীবন নিয়ে আলোচনা অনেক বেশি। তুলনায় ততটা নয় তাঁর রাজনীতি সচেতনতা। বিশ্বজুড়ে তাঁর গুণমুগ্ধরা, বিশেষত তরুণ প্রজন্ম বা জেন–জি, জেন–আলফারা সুরের ভেলায় ভাসতেই অধিক আগ্রহী। তথাপি নিজের মতাদর্শের প্রতি তাদের আগ্রহী করতে পেরেছেন টেলর সুইফট।
গেল সেপ্টেম্বরে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিয়ে বলতে গেলে তুলনায় নিস্তরঙ্গ জলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সেই তরঙ্গ ছড়িয়ে গেছে সুইফটের সমর্থকদের মধ্যেও। এত দিন পরে এসে তাঁর রাজনীতিমনস্কতা হয়ে উঠেছে আলোচনার বিষয়। যদিও সরাসরি কোনো দলের পক্ষ না নিলেও তাঁর সচেতনতাবোধ ছিল আগে থেকেই। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যুতে গলা তুলেছেন।
তবে এবারের নির্বাচনে তাঁর প্রভাবকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। বরং সামনে মাসের মার্কিন নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তাঁর ভূমিকা। এর কারণ সুইফটের বিশাল সাংস্কৃতিক প্রভাবের পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাঁর রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাও বটে।
অবস্থাদৃষ্টে এখন যেন মনে হচ্ছে লড়াই যতটা না কমলা হ্যারিস–ডোনাল্ড ট্রাম্পের, তার চেয়ে বেশি টেলর সুইফট–ইলন মাস্কের। দুই ভুবনের দুই তারকা দুই দলের দুই প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। এ বিষয় নিয়ে পরে নাহয় লেখা যাবে। আপাতত আমরা বরং সুইফটেই থাকি। এবং একটু নিরীক্ষণের চেষ্টা করি মার্কিন নির্বাচনে নিয়ামক বা অনুঘটক হিসেবে এই শিল্পীর ভূমিকা।
টেলর সুইফট তাঁর ক্যারিয়ারের প্রাথমিক পর্যায়ে রাজনৈতিক বিষয়ে নীরব ছিলেন। তবে সেই নীরবতা তিনি ভাঙেন ২০১৮ সালে। সেবারই প্রথম তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের সমর্থন জানান। সে সময়ে সুইফটের সমর্থন তরুণ ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়ক হয়। এরপর ২০২০ সালে, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে জো বাইডেনকে সমর্থন দেন। এ ঘটনার ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল প্রগতিশীল ইস্যুগুলো। এই বিষয়টি প্রভাবক হতে পারে এবারের নির্বাচনে বামপন্থী ভোটারদের ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে সক্রিয় করতে।
কেবল পপ থেকে পলিটিকসে নয়; রাজনীতির পাশাপাশি টেলর সুইফটের প্রভাববলয় আরও বিস্তৃত। সামাজিক ইস্যুগুলোতে তিনি সরব হয়েছেন। বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক স্বার্থ নিয়ে কথা বলেছেন। ফলে সেসব ইস্যুর দানা বাঁধা সহজ হয়েছে। বিভিন্ন সময় তিনি কথা বলেছেন এলজিবিটিকিউপ্লাস–এর অধিকার, নারী অধিকার কিংবা ভোটার দমন নিয়ে। ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক মেরুকরণ নতুন নয়; বরং সেই পরিস্থিতি সত্ত্বেও সুইফট সরব প্রগতিশীলতার পক্ষে। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি অন্তর্ভুক্তিমূলক। তাঁর এই মনোভাব, কোনো সন্দেহ নেই, ভোটারদের একটি বড় অংশকে আকৃষ্ট করে। তদুপরি তাঁর গান ও জনাদৃত ব্যক্তিত্বে আমরা পাই চমৎকার এক মেলবন্ধন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।