জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে বেড়াত মানবপাচার চক্রের সদস্যরা। বেকার ও হতদরিদ্র লোকজনকে স্বল্প খরচে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে টোপ দিত। কেউ রাজি হলে তাদের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কথিত চুক্তি করতো। অতঃপর নেওয়া হতো চুক্তির অর্ধেক টাকা। তাদের মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কাউকে কাউকে নামিয়ে দেওয়া হতো সেন্টমার্টিন কিংবা নির্জন কোনো দ্বীপে। এ পর্যন্ত তাদের হাতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিন শতাধিক ব্যক্তি। প্রতারণার শিকার কেউ কেউ সাগরে ও নির্জন দ্বীপে করুণ মৃত্যুবরণ করেছেন বলে ধারণা করছে র্যাব।
রবিবার রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং কক্সবাজারের পেকুয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচার চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। তারা হলেন-মো. ইসমাইল, শফিউল আলম, রিয়াজ খান রাজু, মো হোসেন এবং মো ইউনুচ মাঝি। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
র্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, ‘এ মানব পাচার চক্রের হোতারা মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লোকজনকে সেন্টমার্টিন কিংবা নির্জন দ্বীপে নামিয়ে দিত। যাদের নির্জন দ্বীপে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের ভাগ্য কি ঘটছে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে প্রতারিতদের কেউ কেউ সাগরে এবং দ্বীপে করুণ মৃত্যুবরণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজু স্বীকার করেছে কমপক্ষে ২০০ জনের পাসপোর্ট তৈরি করেছে। সে হিসেবে ধারণা করছি এ চক্রের হাতে তিন শতাধিক মানুষ প্রতারিত হয়েছে।’
জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া ইসমাইল হোসেন এবং শফিউল আলম সম্পর্কে সহোদর। তারা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে বেকার ও দরিদ্র পরিবারের লোকজনকে স্বল্প খরচে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার টোপ দেয়। কেউ রাজি হলে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কথিত চুক্তি করে। এরপর রিয়াজ খান রাজুকে পাসপোর্ট তৈরির জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট তৈরি করে প্রাথমিক বিশ্বাস অর্জন করে মানবপাচার চক্রের সদস্যরা। এরপর মালেশিয়া নিয়ে যাওয়ার জন্য টার্গেটের কাছ থেকে চুক্তির অর্ধেক টাকা সংগ্রহ করে। পরে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের ট্রলারে তুলে দেওয়া হতো। কয়েক ঘণ্টা সাগরে ঘুরিয়ে তাদের সেন্টমার্টিন কিংবা নির্জন দ্বীপে নামিয়ে দেয়। সেন্টমার্টিনে নামিয়ে দেওয়ারা ফিরে আসলেও বাকিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে, তা অজানা।
র্যাব জানায়- গ্রেফতার ব্যক্তিরা এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। তাদের হাতে কেউ প্রতারিত হলেও কেউ টাকা ফেরত চাইলে মারধর করতো। এমনকি কেউ টাকা দিতে না পারলে স্বাক্ষরযুক্ত স্ট্যাম্পের অজুহাতে ভিকটিমের আবাদি জমি ও বসতবাড়ি দখলে নিয়ে নিত মানবপাচার চক্রের সদস্যরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।