এক বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে একমত হয়েছে উভয় দেশ। বৈঠকে উভয় দেশের মন্ত্রী মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রমবাজার দ্রুততম সময়ে খোলার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। বাংলাদেশ আশা করছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরেই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু করা যাবে। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাসে ঢাকায় আসছে মালয়েশিয়ার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। আগামী ২৪ বা ২৫ নভেম্বর প্রতিনিধিদলটি ঢাকা সফরে আসার পর সমঝোতা স্মারক সই হবে। এরপরই খুলতে পারে বন্ধ থাকা বাংলাদেশের শ্রমবাজার। গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারানের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ওই বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে ন্যূনতম অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানো, উভয় দেশের রিক্রুটিং এজেন্সির সম্পৃক্ততার পরিধি, মেডিক্যাল পরীক্ষা এবং কর্মীর সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা, ডাটা শেয়ারিং ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে ন্যূনতম অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানো এবং কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বিড়ম্বনা কমাতে বাংলাদেশ থেকে বহির্গমনের আগে মাত্র একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের চাহিদার কথা বৈঠকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, যুগ্ম সচিব ফজলুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক আজিজুর রহমান, বিএমইটির পরিচালক নুরুল ইসলাম, হাইকমিশনার মুহ. শহীদুল ইসলাম, কাউন্সিলর (শ্রম) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার পক্ষে ছিলেন সে দেশের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল দাতুআমির বিন ওমর, ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাতু কয়া আবুন, ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাতু মো. খাইরুজ্জামান, লেবার ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক দাতু মোহাম্মদ জেফরি জোয়াকিম আসরী, আন্ডারসেক্রেটারি মিস বেটি হাসান, আন্ডারসেক্রেটারি আব্দুর রহমান, ডেপুটি আন্ডারসেক্রেটারি শাহাবুদ্দিন এবং ডেপুটি আন্ডারসেক্রেটারি শাহ বাচিক প্রমুখ।
দুই দেশের প্রতিনিধিদলের ওই বৈঠকে কর্মীদের উচ্চ অভিবাসন ব্যয় কমানো, কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পাশাপাশি চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে কর্মী পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিভাগও এ বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে আগামী ১১ নভেম্বর মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান।
১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির একটি সিন্ডিকেট মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর মাধ্যমে জনপ্রতি সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে মালয়েশিয়ায় মাহাথির মোহাম্মদের নতুন সরকার গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মী পাঠানোর অনলাইন পদ্ধতি বন্ধ করে দেয়। তৎকালীন প্রবাসী ও বৈদেশিক কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি মালয়েশিয়ায় গিয়ে একাধিক বৈঠক করার পরও শ্রমবাজার চালু করা সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।